ছাগলনাইয়া প্রতিনিধি->>

ছাগলনাইয়া ও ভারতের ত্রিপুরার শ্রীনগর সীমান্ত হাট ফের চালু হয়েছে। করোনা ভাইরাস পরবর্তী তিন বছর বন্ধ থাকার পর মঙ্গলবার সকাল থেকে পুনরায় চালু হয়েছে উপজেলার রাধানগর ইউনিয়নের পুর্ব মধুগ্রাম ও ভারতের ত্রিপুরার শ্রীনগর সীমান্ত এলাকার জিরো পয়েন্টে অবস্থিত বর্ডার হাটটির কার্যক্রম। প্রতি সপ্তাহে একদিন বসছে হাটের কার্যক্রম।

বৈশ্বিক মহামারি করোনাকালে ২০২০ সালের ৩ মার্চ বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ উদ্যোগে সীমান্ত হাটটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। এর আগে ২০১৫ সালের ১৩ জানুয়ারি এ বর্ডার হাটের উদ্বোধন করা হয়েছিলো।
 
করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় গত ২৫ এপ্রিল উভয় দেশের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে ভারতের শ্রীনগর ও বাংলাদেশের ছাগলনাইয়া সীমান্ত হাট ৯ মে থেকে পুনরায় চালু করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।  

দীর্ঘ বন্ধের পর আবারও চালু হওয়ায় হাটে বিরাজ করছে উৎসব। অন্য রকম আবহ তৈরি হয়েছে সীমান্তের শূন্য রেখায়।

আগের নিয়মে সপ্তাহের প্রতি মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত সীমান্ত হাটটি খোলা থাকবে। বাংলাদেশ অংশে হাটের আগের দিন সোমবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে সীমান্ত হাটে প্রবেশের টিকিট বিক্রি করা হয়। আগে এ টিকিটের মূল্য ২০ টাকা হলেও এখন নেওয়া হচ্ছে ৫০ টাকা।  
সীমান্তহাট চালুর মাধ্যমে কাঁটাতারের বেড়ায় দীর্ঘদিন ধরে বিচ্ছিন্ন থাকা দুই দেশের সীমান্তে বসবাসরত নাগরিকদের আবারও মিলনমেলা বসার সুযোগে সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষজন আনন্দিত হলেও সীমান্তহাট খোলার খবরে বাংলাদেশি স্থানীয় বিভিন্ন হাট-বাজারের ব্যবসায়ীদের মধ্যে হতাশা নেমে এসেছে।

তবে ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, প্রতি মঙ্গলবার সীমান্ত হাট চালু থাকায় সবাই সীমান্ত হাটমুখী হয়ে পড়ে। এতে অনেক অর্থ বিনিয়োগ করে বিভিন্ন শপিংমল ও বিপণিবিতানে যারা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নিয়ে বসেছে তারা ক্ষতির সম্মুখীন হয়।

অন্যদিকে সীমান্তহাট চালুর মাধ্যমে কাঁটাতারে বাধায় বিচ্ছেদে পড়া সীমান্তবর্তী দুদেশের নাগরিকদের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছিল।

দশকের পর দশক দুদেশের সীমান্তবাসীরা একত্রে চাষাবাদ করা, খেলাধুলা, সুখ-দুঃখের ভাগাভাগি করা, আত্মার সম্পর্ককে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছিল কাঁটাতারের বেড়া। কাঁটাতারের বেড়ার কারণে তাদের কাছাকাছি আসা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল কয়েক দশক আগে। সীমান্ত হাট তাদের সেই দূরত্ব দূর করে দুদেশের নাগরিকদের আবারও কাছাকাছি এনে দিয়েছিল। সীমান্ত হাট ছিল দুদেশের সাধারণ নাগরিকদের এক বড় প্রাপ্তি।