পরশুরাম প্রতিনিধি->>

পরশুরামে নুর হাবা (৬৫) নামের এক অসহায় বৃদ্বা নারী তাঁর পুত্রবধু উম্মে হাফসার হামলা গুরতর আহত হয়ে অত্যাচার নির্যাততন থেকে বাঁচার আকুতি জানিয়ে সাংবাদ সম্মেলন করেছেন। শুক্রবার (২ ডিসেম্বর) সকালে স্থানীয় একটি কমিউনিটি সেন্টারে এই সংবাদ সম্মেলন করেন। নুর হাবা তাঁর পুত্রবধু উম্মে হাফসার অত্যাচার হয়রানীর হাত থেকে বাঁচতে এবং জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে ফেনীর জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারের কাছে ন্যায় বিচার প্রার্থনা করেছেন।

নুর হাবা সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন ছোট ছেলে মাহবুবুল হক সড়ক দূর্ঘটনায় গুরতর আহত হয়ে গত তিন বছর ধরে পঙ্গু হয়ে বাড়িতে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। তাদের পরিবারের আয়রোজগার করার মতো কেউ না থাকায় বর্তমানে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। কিন্তু বৃদ্ধ বয়সে সে তাঁর পুত্র বধূ হাফসা, তাঁর মা, বোন, পিতা হোনা মিয়া, মামা ইব্রাহিমসহ সন্তানদের নির্মাণ করা বসত ঘর থেকে উচ্ছেদ করে দিয়েছে। তাতেও পুত্রবধু উম্মে হাফসা ক্ষান্ত হননি পরশুরাম থানায় ও কোর্টে কয়েকদিন পর পর মিথ্যা মামলা দিয়ে চরম হয়রানী করে যাচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেছেন, মামলা হামলাসহ বিভিন্ন নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে আমার প্রতিবন্ধি অসুস্থ ছেলে, ছেলের বৌ, আমার মেয়ে, মেয়ের জামাই, ভাই, ভাতিজাসহ হাফসার ভয়ে প্রতিনিয়ত আতংকে দিন কাটাচ্ছি। সে বাড়িতে ধারালো দা নিয়ে ঘুরে, তুচ্ছ কারণে বাড়ির লোকজনকে মারধর ও মামলা হামলার ভয় দেখায়। সে পুলিশ, চেয়ারম্যান, মেম্বার কাউকেই মানেননা, সে যে পরিমান জমির অংশিদার তার থেকে দ্বিগুণ জমি অবৈধভাবে হাফসা জোরপুর্বক দখল করে রেখেছেন।

উত্তর কাউতলী গ্রামের মৃত আবু বক্কর ছিদ্দিকের স্ত্রী নুর হাবা লিখিত বক্তব্যে বলেন শ্রমিক দিয়ে তিনি ধান কেটে বাড়ীতে নিতে গেলে উম্মে হাফসা তার ভাড়াটে লোকজনকে দিয়ে ধারালো অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে জোর পুর্বক অর্ধেক ধান বাড়ীতে নিয়ে যায়। বাকী ধান নেওয়ার সময় বাধা দিলে সে লোহার রড দিয়ে আমাকে পিটিয়ে গুরতর আহত করেন। এবং আমার অসুস্থ্ প্রতিবন্ধি ছেলে ও মেয়েরা আমাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসলে হাফসা, তার পিতা হোনা মিয়া, ইব্রাহিমসহ ৭/৮ জন তাদেরকে পিটিয়ে গুরতর আহত করেন।

স্থানীয় লোকজন আমাদের উদ্বার করে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। ওই দিন রাতে আমার ছেলে বাদী হয়ে পরশুরাম থানায় উম্মে হাফসাসহ পাঁচজনকে আসামী করে পরশুরাম থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

বৃদ্বা বলেন এর আগে আমার পুত্রবধু উম্মে হাফসা তাঁর বাবা হোনা মিয়াসহ আমাকে মারধর করে কাপড় সহ আমার ব্যবহৃত জিনিসপত্র ছুড়ে ফেলে দিয়ে জোর পূর্বক ধাক্কা মেরে আমাকে ঘর থেকে বের করে দেয়।

আমি অত্যন্ত সহজ সরল ও নিরীহ প্রকৃতির। আমি কারো সাথে কোন ঝামেলায় জড়াতে চাইনা, তবুও আমার পুত্রবধু হাফসা বিনা কারণে আমার বিরুদ্বে বিভিন্ন সময় মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে নানা ভাবে হয়রানী করে যাচ্ছে। এবং আমার বাড়ীতে যাতে কেউ না আসে এবং আমার সাথে যাতে কেউ যোগাযোগ না রাখে সেজন্য আমার আত্বীয় স্বজনদেরকেও সে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করে যাচ্ছে।

পরশুরাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো সাইফুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের হলে পুলিশ জড়িত সন্দেহে দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে।