পরশুরাম প্রতিনিধি->>

পরশুরাম উপজেলার কৃষক মোহাম্মদ মেজবাহ। কৃষিকাজ আর গরু ব্যবসা করে তার সংসার চলতো। তার ৪ মেয়ে। বড় মেয়েকে তিনি বিয়ে দিয়েছেন। অন্য ৩ মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে তার সংসার।গত ১৩ নভেম্বর বিকালে ভারত সীমান্তবর্তী জমিতে ধান কাটতে গিয়ে নিখোঁজ হোন মেজবাহ।

স্থানীয়দের ভাষ্য শুনে পরশুরাম মডেল থানা ও বিজিবির সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোনো হদিস মেলেনি সেদিন। তিন দিন পর ভারত সীমান্তের কাটাতারের পাশে মেজবাহারের অর্ধগলিত লাশ দেখে স্থানীয়রা। বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) আইনগত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য লাশটি উদ্ধার করে ভারতে নিয়ে যায়। ২৯ নভেম্বর মঙ্গলবার লাশটি বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে হস্তান্তর করে বিএসএফ।

মেজবাহ স্ত্রী মরিয়ম বেগম বলেন, মেজবাহ’র কোনো ছেলে নেই। একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন তিনি। ৪ মেয়ের মধ্যে বড় মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। আরও তিন মেয়ে রয়েছে। মেয়েদের নিয়ে আমি কিভাবে দিন কাটাবো। কিভাবে সংসার চালাবো। মেজবাহারের মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে আমাদের জীবনে অন্ধকার নেমে এসেছে। আগামীর সময়গুলো কিভাবে কাটবে কিছুই জানি না।

মরিয়ম আরও বলেন, আমার স্বামীতো সেদিন কোনো অপরাধ করেনি। ধান কাটতে জমিতে গিয়েছিল। আমার নিরাপরাধ স্বামীকে যারা ধরে নিয়ে হত্যা করেছে আমি তার বিচার চাই। আমার সংসার কিভাবে চলবে সেই জবাব এখন আমাকে কে দেবে। ঘরে খাবার নেই; চাল-ডাল কিছুই নেই। আমার ও ৩ মেয়ের বরণ-পোষণ ও আত্মসম্মানের দায়িত্ব কে নেবে?

প্রসঙ্গত, পরশুরামে সীমান্তের ওপারে পড়ে থাকা বাংলাদেশের কৃষক মেজবাহ উদ্দিনের লাশ নিয়ে যাওয়ার ১৭ দিন পর হস্তান্তর করেছে ভারতীয় পুলিশ।

মঙ্গলবার দুপুরে বিলোনিয়া ইমিগ্রেশনে চেকপোস্ট দিয়ে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ কৃষকের লাশ হস্তান্তর করেছে বলে জানিয়েছেন ফেনী-৪ বিজিবির অধীন পরশুরামের মজুমদার সীমান্ত ফাঁড়ির কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার মনিরুজ্জামান।

নিহত মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন (৪৭) পরশুরাম উপজেলার উত্তর গুথুমা গ্রামের মফিজুর রহমানের ছেলে। তিনি কৃষিকাজের পাশাপাশি গরু ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন।