বিশেষ প্রতিবেদক->>

নোয়াখালী-ফেনীর বিভিন্ন নদী ও খালে পাওয়া যাচ্ছে জীব বৈচিত্র্য ধ্বংসকারী নিষিদ্ধ মাছ সাকার। শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) সকালে নোয়াখালী কোম্পানীগঞ্জের মুসাপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মোহাম্মদপুর গ্রামের খালে এক জেলের জালে একটি সাকার ফিস ধরা পড়ে। মাছটি কীভাবে খালে এলো- কেউ বলতে পারছে না।

বাসু মিয়া নামে মোহাম্মদপুর গ্রামের এক বাসিন্দা জানান, সকালে মাছটি পাওয়ার কথা জানা যায়। মাছটি কেউ চিনতে পারছিল না। মাছটি দেখতে অপরিচিত হওয়ায় সেটি সংরক্ষণ করা হয়।

ফেনীর সোনাগাজী ও নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ এলাকার বিভিন্ন স্থানে কয়েকটি সাকার ফিস পাওয়া গেছে বলে জানা গেছে।

ফেনী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিল্লাল হোসেন বলেন, সাকার ফিস আমাদের জীব-বৈচিত্র্য ও মৎস্য সম্পদের জন্য চরম ক্ষতিকর। নিষিদ্ধ ঘোষিত মাছটি ফেনী অঞ্চলের নদী জলাশয়ে পাওয়ার খবর ভালো নয়।

নোয়াখালী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন জানান, দেশের একেকটি নদী যেহেতু বিভিন্ন নদীর সঙ্গে সংযুক্ত, হয়ত স্রোতে ভেসে এ অঞ্চলে চলে এসেছে। আমি জনসাধারণকে বলেছি, কেউ মাছটি পেলে যেন মাটিতে পুঁতে ফেলে। সচেতনতামূলক কয়েকটি কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, অ্যাকুরিয়ামের শোভা বাড়ানো সাকার মাউথ ক্যাটফিশ’র উপস্থিতির কারণে কিছুদিন ধরে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন খামারিরা। এই মাছ দেশিয় প্রজাতির মাছের রেণু খেয়ে ফেলে। সাধারণ জৈববৈচিত্রের জন্যও হুমকি।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, কেউ সাকার মাছ আমদানি, প্রজনন, চাষ, পরিবহন, বিক্রি, গ্রহণ বা প্রদান, বাজারজাতকরণ, সংরক্ষণ, প্রদর্শন ও মালিক হতে পারবেন না।

মাছটি সম্পর্কে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া এ মাছ খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য দীর্ঘমেয়াদি ঝুঁকি বয়ে আনতে পারে। মানব শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে নানা রোগ। তবে নিষিদ্ধের খবর এখনও অজানা সাধারণ মানুষের।

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএফআরআই) মহাপরিচালক ইয়াহিয়া মাহমুদ বলেন, দেশের তিন-চারটি জায়গা থেকে নমুনা পরীক্ষা করে দেখা গেছে, সাকার মাছের মধ্যে ভারী ধাতব পদার্থ রয়েছে। পৃথিবীর কোথাও সাকার মাছ মানুষ খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে না। সাকার মাছ পেলেই তা মেরে ফেলতে হবে। আর উন্মুক্ত জলাশয়ে প্রযুক্তি ব্যবহার করে সাকার ধরে পুরুষ বানিয়ে ছেড়ে দেওয়া যেতে পারে। তাহলে তারা প্রজনন করতে পারবে না। সাকার মাছ ধরে দিলে মানুষকে প্রণোদনা দিলে এর হার নদী-নালায় কমবে বলেও তিনি মনে করেন।