সোনাগাজী প্রতিনিধি->>

সোনাগাজীতে নবম শ্রেণির ছাত্রীকে গোপনে বিয়ে করার অভিযোগে চাকরি হারিয়েছেন এক শিক্ষক। বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে স্কুলের পরিচালনা পর্ষদ বৈঠক করে তাকে অব্যাহতি দেয়। অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম শেখ ফরিদ রনি। তিনি আল হেলাল একাডেমীর খণ্ডকালীন শিক্ষক ও স্থানীয় ছাত্রদল নেতা।

প্রতিষ্ঠান ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৭-৮ মাস পূর্বে স্থানীয় শেখ ফরিদ রনি আল হেলাল একাডেমীতে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। পড়ালেখার করানোর পাশাপাশি তিনি নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলেন। বিষয়টি জানাজানি হলে ছাত্রীর পরিবার গোপনে বিয়ে দিতে সম্মত হয়। একপর্যায়ে তাদের বিয়ে হয়। ছাত্রীর বয়স কম হওয়ায় তার পরিবার বিয়ের বিষয়টি গোপন রাখেন। পরে জানাজানি হয়ে যায় বিয়ের বিষয়টি। ফেসবুকে ভাইরালও হয়।

এর প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার বিকেলে স্কুলের পরিচালনা পর্ষদ ছাত্রীর পরিবার ও অভিযুক্ত শিক্ষককে ডাকেন। বিষয়টির প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে অভিযুক্ত শিক্ষককে শ্রেণি কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। আল হেলাল একাডেমীর সিনিয়র শিক্ষক সেলিম আলদীনকে প্রধান করে মোমিনুল হক মানিক ও মো. হানিফকে সদস্য করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি আগামী সাত দিনের মধ্যে কমিটির প্রতিবেদন পেলে পরে পরিচালনা পর্ষদ তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

অভিযুক্ত শিক্ষক শেখ ফরিদ রনি বলেন, পারিবারিকভাবে আকদ হয়েছে, তবে বিয়ে হয়নি। অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছাত্রীকে বিয়ে করার জন্য আকদ করা যায় কিনা এ প্রশ্নের জবাবে সরাসরি ‘না’ উল্লেখ করে তিনি দাবি করেন, কয়েকজন শিক্ষকের সঙ্গে মনোমালিন্য থাকায় তারা বিষয়টি বাজেভাবে উপস্থাপন করে চারদিকে ছড়িয়েছে। তাছাড়া রাজনৈতিক কারণেও আমাকে ফেসবুকে ভাইরাল করা হয়েছে।

আল হেলাল একাডেমীর প্রধান শিক্ষক ওমর ফারুক বলেন, অভিযোগের সত্যতা পেয়ে পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি সামছুল হকের নির্দেশক্রমে তাকে শ্রেণি কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দিয়ে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী সাত দিনের মধ্যে কমিটির প্রতিবেদন পেলে পরে পরিচালনা পর্ষদ তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

সোনাগাজী উপজেলা নির্বাহী অফিসার এসএম মনঞ্জুরুল হক বলেন, আল হেলাল একাডেমীর খণ্ডকালীন শিক্ষক নবম শ্রেণির ছাত্রী বিয়ের বিষয়ে আমাকে প্রতিষ্ঠান বা শিক্ষা বিভাগ থেকে কেউ কিছু জানায়নি। বিষয়টি কি খোঁজ নেয়া হবে।

ফেনী জেলা শিক্ষা অফিসার কাজী সলিম উল্লাহ বলেন, বিয়ের বিষয়ে শিক্ষকদের আলাদা কোন নির্দেশনা না থাকলেও সরকারী বিবাহ আইনে অপ্রাপ্ত বয়স্ক হলে বিয়ে করার সুযোগ নেই। এ বিষয়ে আমি বিস্তারিত খোঁজ নেব।