বিশেষ প্রতিবেদক->>

ফেনী জেলায় বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে ঘটছে হামলা-মামলাসহ ধাওয়া ও পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা। এতে মাঠ দখলে রাখতে মরিয়া আওয়ামী লীগ। অন্যদিকে বিএনপির দাবি, হামলা-মামলায় দেয়ালে তাদের পিঠ ঠেকেছে। এখন আসন্ন সংসদ নির্বাচনই তাদের একমাত্র ভরসা।

গত এক মাসে জেলায় অন্তত ছয় বার বিএনপির মিছিল-সমাবেশকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও পুলিশের সঙ্গে বড় ধরনের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ভাঙচুর করা হয়েছে শতাধিক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও গাড়ি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ারগ্যাস ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করেছে। ঘটনায় আহত হয়েছে অনেকে। এসব নিয়ে পুলিশ বাদী হয়ে এ পর্যন্ত মামলা করেছে তিনটি এবং আসামি করা হয়েছে শত শত নেত-কর্মীকে।

এতে বিএনপির অভিযোগ, মামলা-হামলা, জেলসহ সব বাধা এড়িয়ে মিছিল, সভা-সমাবেশের মাধ্যমে চালিয়ে যাচ্ছে দলের কর্মকাণ্ড। আর অভ্যন্তরীণ কোন্দল ভুলে শক্তিশালী তৃণমূলকে মাঠে নিয়ে নির্দলীয় সরকার ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে রয়েছেন তাঁরা।

জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আলাল উদ্দিন আলাল বলেন, বাধা, হামলা কিংবা সহিংসতা বা হয়রানির কারণে অনেক স্থানে তাঁরা নতুন কমিটি দিতে পারেননি।

আলাল বলেন, পুলিশ প্রতিনিয়ত বাড়ি বাড়ি গিয়ে নেতা-কর্মীদের হয়রানি করছে। তবু নির্দলীয় সরকার ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে যেকোনো সময় মাঠে নামার জন্য আগেভাগে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের সংগঠিত করে রাখছেন। তিনি বলেন, অতীতের চেয়ে বিএনপিও অনেক শক্তিশালী। কোনো গুম-খুন কিছুই তাদের আটকাতে পারবে না।

এদিকে টানা চতুর্থবারের মতো ক্ষমতায় আসতে সুসংগঠিত তৃণমূল এবং দলের অঙ্গসংগঠনকে সঙ্গে নিয়ে ঘরোয়া বৈঠক, সভা-সমাবেশসহ প্রতিদিনই নানা কর্মযজ্ঞ চালাচ্ছে জেলা আওয়ামী লীগ। এরই মধ্যে প্রতিটি শাখা কমিটিকে ঢালাওভাবে সাজিয়েছে দলটি। আর সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরে দৃঢ় প্রত্যয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন দলের নেতা-কর্মীরা। তাঁদের দাবি, যেকোনো সময় কেন্দ্রের যেকোনো সিদ্ধান্ত তাৎক্ষণিক পালন করার মতো অবস্থান রয়েছে জেলা আওয়ামী লীগের। তবে কেন্দ্র যেন জেলার তিনটি আসন নিজ দলের কাউকে ছাড়া অন্যদের না দেয় এবং এই চাওয়া পূরণ করে।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারী বলেন, ‘ইতিমধ্যে যাঁদের গ্রহণযোগ্যতা আছে তাঁদের দলের নেতৃত্ব দেওয়া হয়েছে। কারণ আগামীতে যে দুঃসময় আসছে, তা মোকাবিলা করতে অভ্যন্তরীণভাবে দলকে আরও শক্তিশালী করার কোনো বিকল্প নেই।’

অন্যদিকে জাতীয় পার্টিও দলকে চাঙা রাখতে দলের কর্মীদের অভিব্যক্তি জানতে মাঠে কাজ করছে। জেলার ৪৪ ইউনিয়নের মধ্যে ইতিমধ্যে ২৯টি ইউনিয়নে সাংগঠনিক সব কমিটি সম্পন্ন হয়েছে। বাকিগুলো শিগগির শেষ হবে বলে জানান সভাপতি মোতাহের হোসেন চৌধুরী রাশেদ।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাদিয়া ফারজানা বলেন, ‘অপ্রীতিকর পরিস্থিতি যেন না ঘটে, সেদিকে সোচ্চার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পরিবেশ শান্তিপূর্ণ রাখতে পুলিশ সব সময় সজাগ রয়েছে। মাঠে কাজ করছে গোয়েন্দা পুলিশের একাধিক টিম।’

পরিস্থিতি যা-ই হোক, তবে কোনো সংঘাত কিংবা অস্থিরতা নয়। সুষ্ঠু পরিবেশ প্রত্যাশা স্থানীয়দের।