সোনাগাজী প্রতিনিধি->>

সোনাগাজীতে আবদুল হাই মিস্টার নামে এক ইউপি সদস্যের নেতৃত্বে এলজিইডির সড়কের দুই পাশের প্রায় অর্ধ শতাধিক গাছ লুটের অভিযোগ উঠেছে। গাছ গুলোর অনুমানিক মূল্য পাঁচ লক্ষাধিক টাকা বলে জানা গেছে। সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত উপজেলার আমিরাবাদ ইউনিয়নের ডাকবাংলা-আমির উদ্দিন মুন্সির হাট সড়কের বড় পোল থেকে আল হেরা একাডেমি পর্যন্ত অংশে এ ঘটনা ঘটে।

এলাকাবাসী, এলজিইডি অফিস ও বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা রেঞ্জ কর্মকর্তা রিয়াজ উদ্দিন আমেদের যোগ সাজসে আমিরাবাদ ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের সদস্য আবদুল হাই মিস্টারের নেতৃত্বে কয়েকজন দুর্বৃত্ত বিনা টেন্ডারে বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় অর্ধশতাধিক গাছ লুট করে। এর মধ্যে কিছু গাছ ডাকবাংলার কয়েকটি স’মিলে লুকিয়ে রাখা হয়েছে। কিছু গাছ জব্দ করে ইউনিয়ন পরিষদের সামনে রাখা হয়েছে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের সোনাগাজী উপজেলা প্রকৌশলী মনির হোসেন খান বলেন, গাছগুলো স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের মালিকানায় রয়েছে। গাছগুলো নিলাম দিতে হলে স্থানীয় সরকার বিভাগ বন বিভাগকে অবহিত করবে। বন বিভাগ বিধি মোতাবেক টেন্ডারের ব্যবস্থা করবে। কিন্তু সরকারি ছুটির দিন ও রাতের আঁধারে সরকারি গাছ লুটের বিষয়টি তিনি শুনেছেন। দোষীদের আইনের আওতায় আনার জন্য তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানিয়েছেন।

এ ব্যপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম মঞ্জুরুল হক বলেন, সম্প্রতি আমিরাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান ওই সড়কের পাশে কিছু গাছ ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে বলে একটি আবেদন করেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে উপজেলা রেঞ্জ কর্মকর্তা তদন্ত করে ঝুঁকিপূর্ণ গাছের তালিকা করার জন্য মৌখিক নির্দেশ দিয়েছিলাম। কিন্তু কাউকে গাছ কাটার নির্দেশ দেয়া হয় নাই। বিষয়টি জানার পর তাৎক্ষণিক উপজেলা রেঞ্জ কর্মকর্তাকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছি। তিনি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ইউপি সদস্য আবদুল হাই মিস্টার বলেন, আমি চেয়ারম্যানের নির্দেশে গাছগুলো কাটিয়েছি। এর বাইরে আমি আর কিছু জানিনা।

এ ব্যপারে আমিরাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান আজিজুল হক হিরণ বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ গাছগুলো চিহ্নিত করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন করেছি। উপজেলা রেঞ্জ কর্মকর্তার মৌখিক নির্দেশে গাছগুলো কেটে ইউনিয়ন পরিষদের সামনে রাখা হয়েছে। পরবর্তীতে নিয়ম মেনে নিলাম দেয়া হবে।

এ ব্যপারে উপজেলা রেঞ্জ কর্মকর্তা রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা বন কর্মকর্তার নির্দেশে মঙ্গলবার ছুটির দিনেও তিনি ঘটনাস্থলে গেছেন। সরেজমিনে গিয়ে দেখতে পান ঝুঁকিপূর্ণ গাছের পাশাপাশি বেশ কিছু ঝুঁকিমুক্ত গাছ কাটার প্রমাণ পেয়েছেন। জেলা বন কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানিয়েছেন। উনাদের নির্দেশনা মোতাবেক পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ফেনী জেলা বন কর্মকর্তা মাকসুদ আলম বলেন, বিষয়টি জানার পর উপজেলা রেঞ্জ কর্মকর্তাকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। এ ভাবে গাছ কাটার কোন নিয়ম নেই। রেঞ্জ কর্মকর্তার প্রতিবেদন নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। ইতোমধ্যে তাকে গাছগুলো জব্দ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

সোনাগাজী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ খালেদ হোসেন দাইয়্যান বলেন, এ ব্যপারে কেউ লিখিত কোন অভিযোগ দেয়নি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।