ঢাকা অফিস->>

আজ ১০ই মহররম। পবিত্র আশুরা। ইসলামের ইতিহাসে অন্যতম হৃদয়বিদারক ও মর্মস্পর্শী একটি দিন। এদিনে ইরাকের ফোরাত নদীর তীরে কারবালার প্রান্তরে পৃথিবীর নির্মমতম ঘটনার অবতারণা হয়। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রিয় দৌহিত্র হযরত ইমাম হোসেন (রা.) মাত্র ৭২ জন সহযোগী নিয়ে ইয়াজিদের বিশাল বাহিনীর সঙ্গে জিহাদ করে শহীদ হন।

তার আগে ইয়াজিদ বাহিনীর ঘাতকরা একে একে হত্যা করে ইমাম হোসেন (রা.)-এর স্ত্রী, পুত্র ও নিকটাত্মীয়কে। মুসলিম জাহানের তৎকালীন স্বঘোষিত খলিফা ইয়াজিদ দায়িত্ব তুলে দেয়ার কথা বলে কুফা নগরীতে আমন্ত্রণ জানায় হযরত ইমাম হোসেন (রা.)কে। পথে কারবালার প্রান্তরে অবরুদ্ধ করা হয় তাদের। তৃষ্ণার্ত ইমাম হোসেন (রা.)কে ফোরাত নদীর পানি পর্যন্ত পান করতে দেয়া হয়নি। তার সব সঙ্গী ইয়াজিদ বাহিনীর হাতে শহীদ হওয়ার পর নির্মমভাবে সীমারের হাতে শহীদ হন মহানবীর প্রিয় দৌহিত্র।

ইয়াজিদ ঘোষিত পুরস্কারের লোভে সীমার এ বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড ঘটায়। কারবালার ঘটনা ছাড়া আরও অনেক কারণে ১০ই মহররম তাৎপর্যমণ্ডিত। ইসলামের ইতিহাসে এদিনে অনেক ঘটনা ঘটেছিল। এদিনেই আল্লাহ্‌?তায়ালা পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন এবং এদিনেই পৃথিবী ধ্বংস করবেন। এদিনে অনেক নবী-রাসুল জন্মগ্রহণ করেন। আদি পিতা হযরত আদম (আ.)-এর তওবা কবুল হয়েছিল এদিনে। এদিনই হযরত নূহ (আ.) ও তার সঙ্গীরা ভয়াবহ প্লাবন থেকে মুক্তি পান। হযরত ইউনূস (আ.) মাছের পেট থেকে মুক্তি পান এই দিনে। প্রায় ১৪০০ বছর ধরে বিশ্বের সকল মুসলমান ১০ই মহররমের শোককে শক্তিতে পরিণত করতে রোজা রাখেন। দোয়া, মহররমের মর্সিয়া আর মাতমের মাধ্যমে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা এ দিনটি পালন করে থাকেন। এ দিনটি তাই একদিকে মুসলমানদের জন্য শোকাবহ, অন্যদিকে তাৎপর্যমণ্ডিত। সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও নানা আয়োজনে দিবসটি পালন করা হয়।

পবিত্র আশুরা উপলক্ষে প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশুরার তাৎপর্য তুলে ধরে পৃথক বাণী দিয়েছেন। আশুরা উপলক্ষে মঙ্গলবার রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে তাজিয়া মিছিলের কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। তবে, তাজিয়া মিছিলের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ও আইনশৃঙ্খলার স্বার্থে পুলিশ প্রশাসন কিছু বিধিনিষেধ অরোপ করেছে। এ ছাড়াও দিবসটি উপলক্ষে রাজধানী সহ সারা দেশে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।