বিশেষ প্রতিবেদক->>

ফেনীতে যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিরোধে গঠন করা হয়েছে কুইক রেসপন্স টিম। বর্তমান পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন এই জেলায় যোগদানের পর জেলা পুলিশের উদ্যমী সদস্যদের নিয়ে এই টিম গঠন করা হয়। জেলায় যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা যেমন নারী নির্যাতন, ইভটিজিং, চুরি, ছিনতাই, ডাকাতির ঘটনা শোনামাত্র টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায়।

যৌন হয়রানি বন্ধেও সাড়া ফেলছে এই বাহিনী। স্কুল-কলেজে ছাত্রীদের নিরাপদ যাতায়াতে ভূমিকা রাখতে এই টিম নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে।

শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের লিখিত আবেদন ও দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৯ মে ফেনীর বিজয়দিঘীর পাড়ে স্কুল-কলেজ চলাকালীন অভিযান চালায় ‘কুইক রেসপন্স টিম’। তারা দেখতে পায়, ইউনিফর্ম পরে বই-খাতা নিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্লাস ফাঁকি দিয়ে কিছু শিক্ষার্থী আড্ডা দিচ্ছে। যারা আড্ডা দিচ্ছিল তাদেরকে প্রতিষ্ঠান প্রধান ও অভিভাবকদের নজরে আনে পুলিশ। এরপর থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নজরদারি বাড়ানো হয়। ঘটনার পরদিন বেশ কয়েকটি কলেজে ক্লাস ফাঁকি না দিতে নোটিশ দেয়া হয়।

রামপুর নাসির মেমোরিয়াল কলেজের অধ্যক্ষ মজিবুর রহমান বলেন, ‘অনেক ছাত্র-ছাত্রী বাড়ি থেকে কলেজে যাওয়ার কথা বলে বের হয়ে বাইরে ঘোরাফেরা করে। সম্প্রতি বিষয়টি পুলিশ প্রশাসন আমাদের নজরে নিয়ে আসে। এতে আমরা আরও সোচ্চার হই।’

বৃহস্পতিবার দুপুরে ফেনীর বিজয়সিংহ দিঘীর পাড় ও রাজঝির দিঘীর পাড়ে অন্যদিনের মতো ক্লাস ফাঁকি দিয়ে কোনো শিক্ষার্থীকে দেখা যায়নি।

অল্পসংখ্যক মানুষ এমন অভিযান নিয়ে সমালোচনা করলেও অধিকাংশ অভিভাবক, শিক্ষক-শিক্ষার্থী সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।তাদের দাবি, এরকম অভিযান অব্যাহত থাকুক।

শাহ আলম নামে এক অভিভাবক বলেন, ‘পুলিশ প্রশাসনের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। আমার মেয়ে ফেনী সরকারি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে পড়ে। প্রতিদিন দিঘীর পাড় দিয়ে যাতায়াত করে। একদিন মেয়েকে সঙ্গে করে ওর কলেজে যাওয়ার সময় দেখলাম অনেক ছাত্র-ছাত্রী ইউনিফর্ম পরে দিঘীর পাড়ে আড্ডা দিচ্ছে। অনেকদিন ধরে ভাবছিলাম বিষয়টি প্রশাসনের নজরে আনবো। পুলিশের এমন উদ্যোগে আমি খুশি হয়েছি।’

আমজাদুর রহমান নামে এক অভিভাবক বলেন, ‘স্কুল-কলেজ টাইমে আড্ডা দেয়া দেখে আমি আমার সন্তানের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে থানায় লিখিত আবেদন করেছিলাম। তার দু-একদিন পর প্রশাসন এরকম একটি অভিযান চালিয়েছে। এতে আমি খুশি হয়েছি। করোনাকালীন সময়ে দীর্ঘদিন পড়াশোনা হয়নি। মানসিক বিকাশের নামে এরকম আড্ডা দেয়াকে আমি সাপোর্ট করি না।’

ফেনীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বদরুল আলম মোল্লা বলেন, ‘আজকের শিক্ষার্থীরা আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। তারা আমার সন্তানের মতো। অনেক অভিভাবক আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন, যেন ক্লাস ফাঁকি দিয়ে ছেলে-মেয়েরা আড্ডা দিতে না পারে। আমাদের কুইক রেসপন্স টিম ইউনিফর্ম পরা ছেলেমেয়েদের আড্ডা দিতে বারণ করছে। ক্লাস ফাঁকি দেয়ার মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় স্কুল কর্তৃপক্ষ এবং অভিভাবকদের সচেতন করছি।’

সূত্র: নিউজবাংলা