বিশেষ প্রতিবেদক->>

ফেনীতে ই¯্রাফিল হোসেন ইফাত (১৪) নামে হেফজ বিভাগের এক শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার সকালে শহরের পুলিশ লাইনস এলাকার মিছবাহুল কুরআন ওয়াস সুন্নাহ মাদরাস ভবনের পাশের রাস্তা থেকে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

নিহত ই¯্রাফিল হোসেন ইফাত কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার জগন্নাথ ইউনিয়নের সাত ঘরিয়া গ্রামের ওমান প্রবাসী মো. ইয়াসিনের ছেলে। সে পুলিশ লাইনস এলাকার মিছবাহুল কুরআন ওয়াস সুন্নাহ মাদরাসা হেফজ বিভাগের শেষ পর্বের ছাত্র ছিলেন।

নিহত ই¯্রাফিলের নানা সিরাজুল ইসলাম বলেন, গত ৫ বছর ধরে ই¯্রাফিল হোসেন ইফাত মিছবাহুল কুরআন ওয়াস সুন্নাহ মাদরাসা হেফজ বিভাগের ছাত্র ছিলো। ঈদের ছুটিতে বাড়িতে গেলে সে মাকে জানায় মাদরাসায় শিক্ষকরা তাকে বিভিন্ন ভাবে নির্যাতন করতো এজন্য সে মাদরাসায় ফিরে যাবে না। পরে ছুটি শেষে গত ৭ মে শনিবার ই¯্রাফিলকে মা লায়লা আনজুমান সুমি ফের মাদরাসায় দিয়ে যায়। পরদিন রোববার ই¯্রাফিলকে ডিম আনতে দোকানে পাঠায় মাদরাসা কর্তৃপক্ষ। ই¯্রাফিল ডিম আনতে যেয়ে টাকা হারিয়ে ফেললে সে মাদরাসায় ফিরে যায়নি। পরে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ বিষয়টি পরিবারকে জানালে চারদিন পর শহরের একাডেমী এলাকা থেকে ই¯্রাফিলকে খুঁজে পেয়ে মা লায়লা আনজুমান সুমি শুক্রবার বিকালে ছেলেকে ফের মাদরাসায় দিয়ে যায়।

নিহত ই¯্রাফিলের চাচা ফয়েজ উল্যাহ জানান, ২৮ পাড়া কুরআন শরিফ মুখস্তকরা ই¯্রাফিলকে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ রাখতে না চাইলে শিক্ষার্থীর মা কাকুতি-মিনতি করে ছেলেকে মাদরাসায় রাখতে অনুরোধ করেন। মাদরাসা কর্তৃপক্ষ এসময় ই¯্রাফিলের মা থেকে ছেলে কিছু হলে দায় নিবেনা মাদরাসা এমন একটি বহন সহি নেয় প্রধান শিক্ষক।

চাচা ফয়েজ উল্যাহ আরও জানায়, শনিবার সকালে মাদরাসার প্রধান শিক্ষক ই¯্রাফিলের বাড়িতে ফোন করে তা মা কে মাদরাসায় জরুরী ভিত্তিতে আসতে বলে ফোন কেটে দেয়। পরে মা লায়লা আনজুমান সুমি মাদরাসায় এসে ছেলের মরদেহ দেখতে পায়। এসময় মাদরাসায় থাকা এক শিক্ষক ই¯্রাফিলের মা কে জানায় সে মাদরাসার ৬ তলা ভবন থেকে পড়ে নিহত হয়েছে। ঘটনার পর প্রধান শিক্ষকসহ অন্য শিক্ষকরাও পালিয়ে যায় বলেও চাচা দাবি করেন। মাদরাসা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলেও তিনি জানান। নিহত ই¯্রাফিল দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে সবার ছোট ছিলেন।

মাদরাসার প্রধান শিক্ষক হাফেজ মো. ইউনুছ মুঠোফোনে জানান, গত ৫দিন আগে ই¯্রাফিল মাদরাসা থেকে চলে গেলে গত শুক্রবার বিকালে ফের তার মা জোর করে মাদরাসায় রেখে যায়। তার নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ তাকে রাখতে অস্বৃকৃতি জানালেও তার মা রেখে যায়। একপর্যায় শনিবার ভোরে পড়ার সময় তাকে ক্লাসে দেখতে না পেয়ে বিভিন্নস্থানে অনেক খোঁজাখুজি করা হয়। এর কিছুক্ষণ পর বাড়ির মালিক হাজি রিয়াজ উদ্দিন তাকে খবর দেন একজন ছাত্রের লাশ ভবনের পাশে রাস্তায় পড়ে আছে। পরে ৯৯৯ (ত্রিপল নাইনে) কল দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাশ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। পুলিশের পাশাপাশি পিবিআই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

ফেনী মডেল থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) মো. ইফরান খান জানান, প্রাথমিক ভাবে ধারণা করছে মাদরাসার ৬ তলা ভবনের ছাদ থেকে পড়ে ই¯্রাফিলের মৃত্যু হয়েছে। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ফেনী জোনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে একটি ভাঙ্গা বালতি জব্দ করা হয়েছে। মামলার কার্যক্রম চলমান রয়েছে।