শহর প্রতিনিধি->>

ফেনীতে মোহাম্মদ শোয়েব ওরফে বাবু (১৯) নামে এক কলেজ ছাত্রের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার রাতে শহরের নাজির রোডের একটি বাসার ৫ তলার ঘর থেকে সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

নিহত মোহাম্মদ শোয়েব ওরফে বাবু কুমিল্লা জেলার লাঙ্গলকোট উপজেলার দালুয়া গ্রামের কুয়েত প্রবাসী মোহাম্মদ হানিফের ছেলে। সে ফেনী ন্যাশনাল কলেজে থেকে এইচএসসি পাশ করেছে। দীর্ঘদিন ধরে সে ফেনীতে খালার বাসায় থেকে পড়ালেখা করতো। পড়ালেখার পাশাপাশি শোয়েব একটি দোকানে চাকরি করতো।

শোয়েবের বাবা মোহাম্মদ হানিফ জানান, মঙ্গলবার সকালে আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে যান শোয়েবের খালা কামরুল নাহার হিরা, খালু হারুন অর রশিদ ও শোয়েবের খালাতো ভাই হামজা। কয়েকদিন ধরে ছেলেকে মোবাইল কল দিলেও কল না ধরায় বুধবার তাকে দেখতে কুমিল্লা থেকে ফেনীতে আসেন। বুধবার রাতে শোয়েবের খালা-খালুরাও আত্মীয়ের বাড়ি বেড়ানো থেকে ফেনীর বাসায় ফিরে আসেন। উভয়ে এসে দেখেন দরজা ভিতর থেকে বন্ধ দেখতে পান। বাসায় আর কেউ না থাকায় দারোয়ানের সহযোগিতায় দরজা ভেঙ্গে ঘরে ঢুকেন স্বজনরা। ঘরে ঢুকে শোয়েবের নিথর দেহ সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলছে দেখতে পান। ভাগিনার নিথর দেহ দেখে শোয়েবের খালা কামরুল নাহার হিরা জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন।

শোয়েবের চাচা কামাল মেম্বার জানান, শোয়েব দীর্ঘ ৭ বছর ধরে ফেনী নাজির রোড়স্থ অপরাজিতা ভবন ২ এর ৫ম তলায় খালার বাসায় থাকতেন। খালার বাসায় থেকে স্কুল ও কলেজের পড়ালেখা চালিয়ে আসছিল। পড়ালেখার পাশাপাশি শোয়েব ফেনীর এফ রহমান এসি মার্কেটের একটি দোকানে চাকরি করতো। কিছুদিন পূর্বে দোকানের মালিক থেকে অসুস্থতার কথা বলে এক সপ্তাহের জন্য ছুটি নেন।

শোয়ের সহপাঠি তারেক মনোয়ার জানান, ‘কাসমিরি নামের এক মেয়ের ইমো আইডিতে শোয়েব চ্যাট করতো। প্রেম করত। কিন্তু সম্প্রতি কোন কিছুই সে আমাদেরকে বলতো না। মোহাম্মদ শোয়েব নামে তার ফেসবুক আইডিটিও এখন ইনেকটিভ দেখাচ্ছে। ধারনা করা হচ্ছে ফেসবুক ইনেকটিভ করেই সে আত্মহত্যা করেছে।

ফেনী পৌরসভার স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাইফুল ইসলাম তানজিম জানান, শোয়েবের মরদেহ খাটের ওপর বিছানায় লাগানো ছিল। পাশে চেয়ার অক্ষত অবস্থায় ছিলো। এটা আত্মহত্যা নাকি অন্যকিছু তা রহস্যজনক। সুষ্ঠু তদন্ত করে আইননানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবী করেন কাউন্সিলর।

ফেনী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. নিজাম উদ্দিন জানান, নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ফেনী জেনারেল হাসপতালের মর্গে প্রেরণ করেছে পুলিশ। এটি হত্যা না আত্নহত্যা ময়নাতদন্তে জানা যাবে বলেও তিনি জানান। এঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।