বিশেষ প্রতিবেদক->>

ফুলগাজীতে বাহারি জাতের বারোমাসি তরমুজ চাষ করে রীতিমতো তাক লাগিয়ে দিয়েছেন শৌখিন কৃষক আবুল খায়ের ওরফে প্রকৌশলী মিন্টু। ফুলগাজী উপজেলার দরাবরপুর ইউনিয়নের ধলিয়া এলাকায় ৯৫ শতক জমিতে মাচায় বিশেষ পদ্ধতিতে তিনি চাষ করেছেন ভিন্ন স্বাদের এই তরমুজ, মরুর ফল রক মেলন ও সাম্মাম।

আবুল খায়ের মিন্টু জানান, ২ বছর আগে ইউটিউব ভিডিওতে চাষ দেখে তিনি এই তরমুজ চাষে উদ্ধুদ্ধ হন। চলতি বছরে বাড়ির পাশে ৯৫ শতক জমি লিজ নেন। মার্চ মাসের শুরুতে তিনি চাষাবাদ করেন সুইট মেলন, অমিক্রন ও বাংলালিংক জাতের তরমুজ৷ এপ্রিলের শেষের দিকেই ফলন উঠতে শুরু করেছে। মোট তিন হাজার তরমুজকে তিনি ব্যাগিং করেছেন। প্রতিটি তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ৩৫০ টাকায়।

তিনি আরও জানান, এ ৯৫ শতক জমিতে তরমুজ চাষ করতে খরচ হয়েছে সব মিলিয়ে আড়াই লাখ টাকা। তার উৎপাদিত এ তরমুজগুলো বাজারে গিয়ে বিক্রি করতে হয় না। মানুষ ফসলের মাঠে এসেই কিনে নিয়ে যান। ৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে তরমুজ।

মিন্টু আরও জানান, যা ফলন হয়েছে তা বিক্রি করলে আসবে ৬ লাখ টাকার মতো। সে হিসাবে লাভের পরিমাণ হবে আড়াই লাখের বেশি।

সাহাব উদ্দিন জানান, কেজি ৭০ টাকা দামে তিনি তরমুজ কিনেছেন। দামে কিছুটা বেশি হলেও তাজা এবং খুব স্বাদের।

তরমুজ কিনতে আসা হাবিবুল্লাহ নামের একজন জানান, এতদিন ভেতরে লাল তরমুজ খেয়েছি, কখনও হলুদ তরমুজ দেখিনি। ভিন্ন রং ও স্বাদের তরমুজ খেতে তিনি তরমুজ কিনেছেন।

স্থানীয় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মনোজ কান্তি দেব নাথ বলেন, আবুল খায়ের মিন্টুকে বীজ, সার ও সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হয়েছে। তিনি বাংলালিংক জাতের ভেতরে হলুদ, অমিক্রন ও সুইট মেলন জাতের তরমুজ চাষ করে লাভবান হয়েছেন। তিনি হয়ে উঠেছেন ফেনী কৃষি বিভাগের দৃষ্টান্ত।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানান, বারোমাসি ছোট আকারের মিষ্টি তরমুজের চাষ এ অঞ্চলের জন্য এটিই প্রথম। সাধারণ তরমুজের চেয়ে এই ফলের স্বাদ অনেক বেশি। এটি একটি পুষ্টিকর মিষ্টি ফল। কৃষকরা সঠিকভাবে এর চাষাবাদ করতে পারলে অনেক লাভবান হবেন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ তারিক মাহমুদুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করার জন্য কারিগরি সহযোগিতাসহ প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এতে কৃষকদের মাঝে চাষাবাদের আগ্রহ বাড়ছে। জেলাজুড়ে এখন পর্যন্ত মাঠের পরিবেশ ভালো। লাভের বিষয়টি বিবেচনা করেই কৃষকরা তরমুজ চাষে ঝুঁকছেন। আশা করি আগামী বছরে আরো বেশি করে এ তরমুজ চাষাবাদ করবেন কৃষকরা।

প্রসঙ্গত, আবুল খায়ের মিন্টু দীর্ঘদিন ঠিকাদারি করতেন। সেখান থেকে কিছুটা অবসর নিয়ে নেমেছেন ফসলের মাঠে। পেতে শুরু করেছেন সাফল্য।