সৌরভ পাটোয়ারী: ফেনী শহরে ফুলগাজী উপজেলা চেয়ারম্যান একরামুল হক হত্যাকাণ্ডের সময় সন্ত্রাসীদের গায়ে ফেনী সরকারি কলেজের ড্রেস ও অনেকের মুখে গামছা প্যাঁচানো ছিল বলে নিশ্চিত করেছেন গাড়িতে থাকা একরামের বন্ধু সৌদিপ্রবাসী দেলোয়ার হোসেন।

সন্ত্রাসীদের হামলায় গুরুতর আহত দেলোয়ার জানান, ফেনী রেললাইন পার হওয়ার পরে একাডেমির ফারুক হোটেল পার হয়ে বিলাসী হলের সামনে পৌঁছামাত্র চারদিক থেকে আক্রমণ শুরু হয়। হঠাৎ রাস্তায় ব্যারিকেড দেয় সন্ত্রাসীরা। সঙ্গে সঙ্গে ১৫-২০ জন সন্ত্রাসী এসে রামদা, কিরিচ দিয়ে আক্রমণ শুরু করে। পাশে অস্ত্র হাতেও অনেকে দাঁড়িয়ে ছিল।

দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমরা কিছু বুঝে উঠতে পারছিলাম না। মাত্র কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে আমাদের ড্রাইভার গাড়ির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি অটোরিকশাকে ধাক্কা দেয়। এরপর ফুটপাতের ওপর উঠে গাড়িটি আটকে যায়। এ সময় সন্ত্রাসীরা আমাদের কিরিচ দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপায় এবং লাঠি, হকিস্টিক দিয়ে আঘাত, পিস্তল দিয়ে অনবরত গুলি করতে থাকে। তারা গাড়ির গ্লাস ভেঙে একরামের গায়ে কয়েকটি গুলি করলে আমি নিজে দরজার গ্লাস ভেঙে কোনোমতে বের হয়ে আসি।’

দেলোয়ার হোসেন আরো বলেন, ‘কম করে হলেও ২০০ লোক ছিল সেখানে। কারো কারো গায়ে ফেনী কলেজের ড্রেস ছিল। সবাই ছিল বয়সে তরুণ। যারা গুলি করেছে, তাদের আমি সরাসরি দেখেছি। তাদের নাম আমি জানি না। কিন্তু প্রত্যেককেই দেখলে চিনব।’

তিনি বলেন, ‘গাড়ি থেকে বের হয়ে আসার পর সন্ত্রাসীরা আবারও আমাকে আঘাত করে। আমার মানিব্যাগ নিয়ে গেছে। আমার মোবাইল চেয়েছে, বলেছি মোবাইল আমার গাড়ির ভেতরে রয়ে গেছে। পকেটের টাকাপয়সা সব নিয়ে গেছে। আমি চিৎকার করছিলাম। আমার সামনেই আমার বন্ধুসহ গাড়িটা দাউ দাউ করে জ্বলছিল।’

তিনি বলেন, ‘সবাই আমাকে বলছিল যে, গাড়ি ব্লাস্ট করতে পারে, সরে আসেন। কিন্তু আমি বলছি- আমার বন্ধুকে না বের করা পর্যন্ত আমি বের হব না। পরে আমাকে উদ্ধার করে ডায়াবেটিক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

দেলোয়ার হোসেন আরো বলেন, ‘প্রাথমিক চিকিৎসার পর তারা আমাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করে।’

IMG_2822