বিশেষ প্রতিনিধি->>

ফেনীর ফুলগাজীতে এক নারীকে গণধর্ষন করে মুখে বিষ ঢেলে হত্যার চেষ্টা করেছে দুর্বৃত্তরা। ধর্ষনের শিকার ওই নারীটি ফেনী সদর হাসপতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। বুধবার রাতে উপজেলার মনতলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
ক্ষতিগ্রস্থ মেয়ের মা লিপি আক্তার জানান, বুধবার রাতে ফুলগাজী উপজেলার মনতলা গ্রামের রিক্সা চালক আবদুল মান্নানের মেয়েকে (২০) বাড়িতে একা পেয়ে তিনজন দুর্বুত্ত ঘরে প্রবেশ করে। এসময় তারা জোরপূর্বক মেয়েটিকে গণধর্ষন করে মুখে বিষ ঢেলে দেয়। পরে দৃর্বৃত্তরা ঘরের মুল্যবান জিনিসপত্র লুট করে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে প্রতিবেশীরা তার মেয়েকে উদ্ধার করে রাতে ফুলগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। পরে বৃহস্পতিবার সকালে আহত মেয়েটিকে ফেনী সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঘটনার সময় মেয়ের বাবা ফুলগাজী বাজারে রিক্সা চালাচ্ছিলেন আর তিনি (মা) পাশবর্তী নানীর বাড়িতে ছিলেন।
ক্ষতিগ্রস্থ মেয়ের বাবা আবদুল মান্নান জানান, মেয়েটি বিয়ের পর স্বামীর সাথে ছাড়াছাড়ি হওয়ার দীর্ঘদিন ধরে তার ঘরে থাকছিলো। বিগত কয়েক মাস ধরে স্থানীয় বখাটে হুমায়ুন, বেলাল ও রুবেল তার মেয়েকে বিভিন্ন ভাবে উপ্তক্ত করছিলো। বুধবার তার মেয়েকে গণধর্ষনের পর দুর্বৃত্তরা মধ্যরাতে তাকে ফোন করে পুলিশকে বিষয়টি না জানাতে চাপ দেয়। পুলিশ জানালে তারা তার পরিবারের সবাইকে হত্যা করে ঘর জ্বালিয়ে দিবে বলে হুমকি দেয়। তিনি রাতেই পুলিশকে বিষয়টি জানালে ফুলগাজী থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এ ঘটনায় তিনি (মেয়েটির বাবা) আসামীদের নাম উল্লেখ করে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। অভিযুক্ত হুমায়ুন স্থানীয় আওয়ামী লীগ কর্মী হিসেবে এলাকায় পরিচিত বলেও তিনি জানান।
ফেনী সদর হাসাপতালের তত্বাবধায়ক চিকিৎসক সরওয়ার জাহান জানান, মেয়েটির শারীরিক পরীক্ষা করা হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে ধর্ষনের বিষয়টি জানা গেছে। বর্তমানে মেয়েটি হাসপাতালের মহিলা ওয়ার্ডে চিকিৎসা সেবা চলছে। শারীরিক পরীক্ষার প্রতিবেদন পেলে গণধর্ষন না ধর্ষন এ বিষয়টি নিশ্চিত করা যাবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
এদিকে ফুলগাজী উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল আলিম বৃহস্পতিবার দুপুরে ফেনী সদর হাসপাতালে আহত মেয়েটিকে দেখে উপস্থিত সাংবাদিকদের জানান, অভিযুক্ত সকলকে আইনের আওয়তায় আনার জন্য তিনি পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে। এঘটনায় যারা জড়িত তাদের কেউই রেহাই পাবে না বলে তিনি নিশ্চিত করেছেন।
ফুলগাজী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মাঈনুদ্দিন জানান, ধর্ষনের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। মামলা দায়ের হলে আসামী গ্রেপ্তারে অভিযান চালাবে পুলিশ।
ফেনীর ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার (অতিরিক্ত পুলিশ সুপার) শামছুল আলম সরকার জানান, গণধর্ষনের ঘটনাটি তার জানা ছিলো না। তিনি সাংবাদিকের মাধ্যমে জানার পর ফুলগাজী থানার পরিদর্শককে বিষয়টি খতিয়ে দেখে আসামীদের গ্রেপ্তারে নির্দেশ দিয়েছেন।