বিশেষ প্রতিনিধি->>

ফেনী জেলা বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়েছেন যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। শহরের ইসলামপুর রোডে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সম্মুখে মঙ্গলবার রাত থেকে তারা পালাক্রমে সেখানে অবস্থান করছেন। শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকা, বিএনপি অধ্যুষিত রামপুর এলাকার বিভিন্ন পয়েন্টে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনী অংশে ২৭ কিলোমিটার এলাকায় বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে যুবলীগ-ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা, লাঠি ও দেশীয় নিয়ে অবস্থান করছে।

সরেজমিন ঘুরে বুধবার দুপুরে দেখা যায়, শহরের ইসলামপুর সড়কে বিএনপির দলীয় অস্থায়ী কার্যালয়ে তালা ঝুলছে। কার্যালয়ের সামনে অবস্থান করছেন ফেনী পৌর যুবলীগ সভাপতি রফিকুল ইসলাম ভূঁইয়ার নেতৃত্বে যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।

শহরের মডেল হাই স্কুল এলাকার ব্যবসায়ী আবদুল কাদের বলেন, মঙ্গলবার রাত থেকে ওই এলাকায় অপরিচিত যুবকরা লাঠি ও হকিস্টিক হাতে গলির মুখগুলোতে দাঁড়িয়ে রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা এসব যুবকদের কাউকে চিনে না বলেও জানিয়েছে।

মহাসড়কের মহিপাল এলাকার বাসিন্দা মোজাম্মেল হক বলেন, বুধবার সকালে ঘুম থেকে উঠি দেখছি বিভিন্ন গলিতে অপরিচিত যুবকরা দেশীয় অস্ত্র হাতে অবস্থান করছে। বেশিরভাগ যুবকদের বয়স ১৫ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে।

ফেনী পৌর যুবলীগ সভাপতি রফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, ইসলামপুর সড়কে বিএনপির অফিস আছে বলে আমাদের জানা নেই। এই সসড়কটি ব্যবসায়ীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি জায়গা। অতীতে বিএনপি-জামায়াত এখানে অগ্নিসন্ত্রাস করেছে। তাই মানুষের জানমালের নিরাপত্তা ও স্বস্তি দেওয়ার জন্য ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারীর নির্দেশে আমরা এখানে অবস্থান করছি।

ফেনী সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শুসেন চন্দ্র শীল বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনীর মোহাম্মদ আলী থেকে ফাজিলপুর অংশে ২৭ কিলোমিটার এলাকায় ১৫টি স্থানে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে যুবলীগ-ছাত্রলীগ দেড় হাজার নেতা-কর্মীরা পালাক্রমে অবস্থান করছে। মহাসড়কে নাশকতা এড়াতে ও যানমালের নিরাপত্তায় মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে একার্যক্রম শুরু হয়েছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত নেতা-কর্মীরা পালাক্রমে দায়িত্ব পালন করবে।

জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আলাল উদ্দিন আলাল বলেন, ফেনীর পুলিশ প্রশাসন ক্ষমতাসীনদের বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে বসিয়েছেন। রাত থেকে তারা দলীয় কার্যালয়ের সামনে বসে বিভিন্ন ব্যানার-ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলেছেন। তারা আমাদের সঙ্গে কোনোভাবে একটি ঝামেলা করে গৃহযুদ্ধ লাগাতে চায়। বাজারের দোকানপাট লুটপাট করার জন্য এই লুটেরারা অবস্থান নিয়েছে। তারা রাজনৈতিক নেতা নয়, মানুষের পর্যায়েও পড়ে না।

তিনি আরও বলেন, গত ২০ দিনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান চালিয়ে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শেখ ফরিদ বাহার, যুগ্ম আহ্বায়ক গাজি মানিক, পৌর বিএনপির আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন বাবুল, জেলা যুবগীল সভাপতি জাকির হোসেন জসিম, সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন খন্দকারসহ অন্তত দুই শতাধিক নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে। দলীয় নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে প্রায় ২০টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা হামলা গ্রেপ্তার করে প্রহসনের নির্বাচন করতে দেয়া হবে না।

ফেনীর পুলিশ সুপার জাকির হাসান বলেন, অবরোধে নাশকতা এড়াতে সড়ক-মহাসড়কে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী দায়িত্ব পালন করছে।

প্রসঙ্গত, সরকার পতনের একদফা দাবিতে বিএনপি-জামায়াত ও সমমনা দলগুলো গত ২৮ অক্টোবর থেকে হরতাল-অবরোধসহ নানা কর্মসূচী পালন করছে।