বিশেষ প্রতিবেদক->>

ফেনীতে বর্তমান সরকারের গত ৩ মেয়াদে পানি সম্পদ ও ব্যবস্থাপনা উন্নয়নে ফেনীতে ৮৩১ কোটি ৪৮ লাখ টাকার উন্নয়ন কাজ করেছে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড, ফেনী (বাপাউবো)। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন উন্নয়ন প্রকল্প সম্পর্কে পাউবো ফেনীর নির্বাহী প্রকৌশলী (পুর) মোহাম্মদ রাশেদ শাহরিয়ার।

দপ্তরটির ফেনী কার্যালয় হতে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, গত ২০০৭ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত ফেনীর পরশুরামে সীমান্ত নদী সংরক্ষণ ও উন্নয়ন প্রকল্পের ১ম পর্যায়ে ৫ কোটি ৩১ লাখ টাকার প্রতিরক্ষামূলক কাজ করা হয়েছে।

এছাড়া গত ২০০৩ সাল হতে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ফেনীর দাগনভূঞা এবং সোনাগাজী উপজেলায় নতুন ও পুরাতন ডাকাতিয়া ছোট ফেনী নদীর বেসিন উন্নয়ন প্রকল্পে ৫ কোটি ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে নদী পুনঃখনন করা হয়েছে। গত ২০০৪ সাল থেকে ২০১৬ সালের জুন পর্যন্ত ফুলগাজী ও পরশুরামে পানি ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ইরিগেশন ইনলেট তৈরি ও বাঁধ মেরামত কাজ করা হয়েছে।

একই সূত্রমতে, ২০০৪ সাল থেকে ২০০৫ সাল এবং ২০১১ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত দুই মেয়াদে ১৩৭ কোটি ৪৯ লাখ টাকা ব্যায়ে ফেনী সদর, ফুলগাজী এবং পরশুরামে মুহুরী-কহুয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচ প্রকল্পে বাঁধ মেরামত ও প্রতিরক্ষামূলক কাজ করা হয়েছে। গত জুলাই ২০০৫ সাল থেকে ২০০৭ সালের জুন পর্যন্ত চট্টগ্রামে মিরসরাইয়ে ফেনী নদীর ভাঙ্গন থেকে শুক্কুরবাড়িয়ার হাট ও করেরহাট রক্ষায় তীর প্রতিরক্ষামূলক কাজ করা হয়েছে।

এছাড়া গত ২০১১ সালের মার্চ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের আওতায় ৬৬ কোটি ২১ লাখ টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের উপকূলবর্তী এলাকায় সেচ ব্যবস্থা উন্নয়ন ও মুহুরী একরিটেড এলাকার সিভিএসপি বেড়িবাঁধ উন্নীতকরণ প্রকল্পের আওতায় রেগুলেটর নির্মাণ ও বাঁধ মেরামত কাজ করা হয়েছে।

একই সূত্র জানায়, গত ২০১১ সালের অক্টোবর থেকে ২০১৫ সালের জুন পর্যন্ত ৬৫ কোটি ৭১ লাখ টাকা ব্যয়ে ফেনীর সোনাগাজীতে ফেনী রেগুলেটরের ভাটিতে পাইলট চ্যানেল খনন এবং মিরসরাইয়ের পশ্চিম জোয়ার এলাকায় ফেনী নদীর বাম তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের আওতায় পাইলট চ্যানেল খনন এবং ক্লোজার ড্যাম নির্মাণ করা হয়েছে।

এছাড়া গত ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৯ সালের জুন পর্যন্ত ১৪ কোটি ৮২ লাখ টাকা ব্যয়ে ফেনীর ছাগলনাইয়া এবং ফুলগাজী উপজেলার দক্ষিণ সতর নদীর কূল ও মনিপুর এলাকা মুহুরী নদীর ডান তীর রক্ষা প্রকল্পের আওতায় তীর প্রতিরক্ষামূলক কাজ করা হয়েছে।

গত ২০২৯ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত ৪৫ কোটি ১১ লাখ টাকা ব্যায়ে ফেনীর ছাগলনাইয়া ও সদর উপজেলার ফেনী নদীর ডানতীরের ভাঙ্গন হতে লাঙ্গল মোড়া ও জগৎজীবনপুর এলাকার রক্ষা প্রকল্পের আওতায় তীর প্রতিরক্ষামূলক কাজ ও ড্রেজিং করা হয়েছে।

পাউবো ফেনী আরও জানায়, গত ২০১৮ সালের নভেম্বর থেকে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত ১২ কোটি ৩৬ লাখ টাকা ব্যায়ে ফেনীর পরশুরাম, ফুলগাজী, দাগনভূঞা, সোনাগাজী, ছাগলনাইয়া ও ফেনী সদরের ৪৫ দশমিক ৪৩ কিলোমিটার অভ্যন্তরীণ ছোট নদী, খাল ও জলাশয় পুনঃখনন করা হয়েছে। গত ২০১৪ সাল ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত ৩৭৪ কোটি ৮৯ লাখ টাকা ব্যায়ে ফেনীর পরশুরাম, ফুলগাজী, দাগনভূঞা, সোনাগাজী, ছাগলনাইয়া ও ফেনী সদরে ইরিগেশন ম্যানেজমেন্ট ইমপ্রুভমেন্ট ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম প্রকল্পের আওতায় ৩৭৩ দশমিক ০৬৬ কিলোমিটার খাল পুনঃখনন, ৬টি রেগুলেটর নির্মাণ, ১৭ দশমিক ৭৫০ কিলোমিটার বৈদ্যুতিক লাইন স্থাপন, ২৮৩ কিলোমিটার বিদ্যুতায়িত পাম্প হাউজ এবং ৮৫০টি ভুগর্ভস্থ পাইপ লাইন স্থাপনের কাজ চলছে। ইতোমধ্যে এ প্রকল্পের ৮১ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে বলে পাউবো জানিয়েছে।

এছাড়া গত ২০২৯ সালের জুলাই থেকে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত ফেনীর পরশুরামে সীমান্ত নদীর তীর সংরক্ষণ এবং উন্নয়ন প্রকল্পের ২য় পর্যায়ে ১ দশমিক ০১৫ কোটি টাকা ব্যায়ে তীর প্রতিরক্ষামূলক কাজ চলছে। ইতোমধ্যে প্রকল্পের ৫৮ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।

অন্যদিকে ৭৩১ কোটি ৫৭ লাখ টাকা ব্যায়ে ফেনীর উত্তরাঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি ‘মুহুরী-কহুয়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচ প্রকল্পের পুনর্বাসন’ শীর্ষক প্রকল্পর পুনঃগঠনকরণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে পাউবো জানিয়েছে।

পাউবো জানায়, প্রকল্পটির উপর গত ২০২২ সালের ৭ এপ্রিল পরিকল্পনা কমিশনের পিইসি সভায় প্রকল্পটি সম্ভাব্যতা সমীক্ষা সম্পাদনান্তে পুনঃ দাখিলের জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়। নির্দেশনা মোতাবেক বাইরের প্রতিষ্ঠান (৩য় পক্ষ) কর্তৃক পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ে পাসম দাখিল করা হয়েছে। এ সমীক্ষা প্রকল্পের উপর গত ২০২২ সালের ১১ সেপ্টেম্বর ‘পাসম’তে যাচাই সভা অনুষ্ঠিত হয়। সিদ্ধান্ত মোতাবেক বিস্তারিত সমীক্ষার জন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠানসমূহ নিয়োগের ব্যাপারে পরিকল্পনা দপ্তর পাউবো ঢাকা পরিদপ্তর কর্তৃক সমীক্ষা প্রকল্পটির পিএফএস বা পাসম পুনঃগঠনকরণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।