নিজস্ব প্রতিনিধি->>

ফেনীর একটি প্রতারণার মামলায় আবু জাহের (৩৩) নামে এক চাকরিচ্যুত কারারক্ষীকে গ্রেপ্তার করেছে পিবিআই। মঙ্গলবার রাতে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম বাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তার আবু জাহের চট্টগ্রামের আস্তানা নগর এলাকার আবুল কালামের ছেলে।

বুধবার দুপুরে পিবিআই ফেনীর পুলিশ সুপার মুহাম্মদ শরীফুল ইসলাম তার নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানান, ২০১৯ সালে স্ত্রীর করা নারী ও শিশু নির্যাতনের একটি মামলায় চাকরিচ্যুত হন কারারক্ষী আবু জাহের। পরবর্তী সময়ে প্রতারণাকেই পেশা হিসেবে বেছে নেন এ যুবক। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাদের সিল জালিয়াতি করে অর্থ হাতিয়ে নিতেন তিনি।

সম্প্রতি ফেনী সদর উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের মেম্বার একরামুল হকের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করে নিজেকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দেন আবু জাহের। আলাপকালে ইউপি মেম্বারকে ধর্মপুর ইউনিয়ন পরিষদের বিশেষ কিছু প্রকল্প বরাদ্দ দেবেন বলে প্রলুব্ধ করেন তিনি। তার কথায় আশ্বস্ত হয়ে সেদিন বিকাশের মাধ্যমে ২৫ হাজার টাকা পাঠান ভুক্তভোগী মেম্বার। এভাবে ওই ইউপি মেম্বারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করেন আবু জাহের।

গত ১০ সেপ্টেম্বর নিজ ওয়ার্ডের অনুকূলে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব সই করা স্পেশাল বরাদ্দ হিসেবে প্রায় ৮০ লাখ টাকার প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রশাসনিক একটি অনুমোদনপত্র ডাকযোগে পাঠান আবু জাহের। ভুক্তভোগী ইউপি মেম্বার বিষয়টি বিশ্বাস করে তার কথামতো বিকাশ ও নগদের মাধ্যমে আবারও ৬ লাখ ৩৫ হাজার টাকা পাঠান। টাকা দেওয়ার কয়েক দিন পর বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হলে ইউপি মেম্বার প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রশাসনিক অনুমোদন পত্রটি ফেনী স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক গোলাম মোহাম্মদ বাতেনের কাছে উপস্থাপন করেন। তখনই প্রতারণার বিষয়টি নিশ্চিত হন তিনি।

এ ঘটনায় ২৬ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার ভুক্তভোগী ধর্মপুর ইউনিয়নের ইউপি মেম্বার একরামুল হক বাদী হয়ে ফেনী মডেল থানায় একটি মামলা করেন। পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ফেনী পিবিআই এর উপ-পরিদর্শক মোরশেদ আলমের নেতৃত্বে একটি টিম কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম বাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।

গ্রেপ্তারের সময় তার কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন সিলমোহর, নগদ ১৬ হাজার টাকা ও দুটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ সুপার শরীফুল ইসলাম আরও জানান, আবু জাহের এভাবে দেশের অনেক ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলেছেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছেন। আসামিকে বুধবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।