সোনাগাজী প্রতিনিধি->>

সোনাগাজীতে নাজিরপুর ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসায় সহকারি সুপার পদে ঘুস দিতে অস্বীকার করায়, নিয়োগ পরীক্ষায় প্রথম হওয়া সত্ত্বেও নিয়োগ বাতিলের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই পদে চাকরি প্রার্থী ও নিয়োগ পরীক্ষায় প্রথম স্থান অর্জনকারী মাও. মোহাম্মদ একরামুল হক এ অভিযোগ করেন।
মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি সহ নিয়োগ পরীক্ষায় নিয়োজিতদের বিরুদ্ধে তিনি এ অভিযোগ আনেন। প্রতিকার চেয়ে তিনি মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের নিকট লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
মাদরাসা কর্তৃপক্ষ, চাকরি প্রার্থী ও স্থানীয়দের সূত্রে জানা গেছে, নাজিরপুর ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসায় বিধি মোতাবেক একজন সহকারি সুপার ও আয়া আবশ্যক চেয়ে গত ৬জুন পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। গত ২৫ নভেম্বর শুক্রবার লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় সহকারি সুপার পদে পাঁচজন ও আয়া পদে তিনজন অংশগ্রহণ করেন। সহকারি সুপার পদে সর্বোচ্চ নাম্বার পেয়ে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় প্রথমস্থান অর্জন করেন মোহাম্মদ একরামুল হক। তিনি লিখিত পরীক্ষায় ২৭, মৌখিকে-৫ এবং সনদে ৬ নাম্বার সহ মোট ৩৮ নাম্বার পান।
তাকে নিয়োগের জন্য চুড়ান্ত করা হয়েছে মর্মে মৌখিকভাবে ফলাফল ঘোষণা করে মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. কামাল উদ্দিন তাকে পরে দেখা করতে বলেন এবং ডিজির প্রতিনিধির স্বাক্ষরিত উত্তর পত্র তার হাতে তুলে দেন। পরবর্তীতে তিনি সভাপতির সাথে দেখা করলে তিনি অফিস সহকারি মোহাম্মদ শাহ আলমের সাথে দেখা করতে বলেন। অফিস সহকারি শাহ আলমের সাথে দেখা করলে তিনি সভাপতি, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও পরিচালনা কমিটির সদস্যদেরকে ম্যানেজ করার জন্য একরামুল হকের নিকট তিন লাখ টাকা ঘুস দাবি করেন।
একরামুল হক দাবিকৃত ঘুস দিতে অস্বীকার করায় সভাপতি নানা অজুহাতে টালবাহনা করতে থাকেন।
পরবর্তীতে তড়িঘড়ি করে তিনদিনের মাথায় গোপনে সভা ডেকে সভাপতি সহ কতিপয় সদস্যের সিদ্ধান্ত মোতাবেক গত ২৯ নভেম্বর ফের দুটি পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন।
প্রতিকার চেয়ে মোহাম্মদ একরামুল হক মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের নিকট লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এছাড়া সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগের অনুলিপিও দিয়েছেন।
মাদরাসার সুপার মাও. মোহাম্মদ আবু তাহের বলেন, আমি শারীরিকভাবে খুবই অসুস্থ। বিয়টি সম্পর্কে পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি কামাল সাহেব ভালো বলতে পারবেন।
এ ব্যপারে মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন বলেন, ডিজির প্রতিনিধি কাজী আবদুল হান্নান আমাদেরকে বুঝিয়ে পরীক্ষা নিয়েছেন। আমরা ওইদিন পরীক্ষা নিতে রাজি ছিলামনা। ১২ জন আবেদনকারীর মধ্যে পাঁচজন উপস্থিত ছিলেন। মাদরাসার সুপারও অসুস্থ এবং অযোগ্য। তাই চেয়েছিলাম একজন যোগ্য সহ সুপার নিয়োগ দিতে। ঘুস দাবির বিষয়ে অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি শুনেছি চাকরি প্রার্থী ডিজির কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। পূণরায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর ১২-১৩জন আবেদন করেছেন।
চাকরি প্রার্থী মাও. মোহাম্মদ একরামুল হক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, নিয়োগ পরীক্ষার ফলাফল অবৈধভাবে বাতিলের বিরুদ্ধে সভাপতি সহ নিয়োগ কমিটির বিরুদ্ধে মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের ডিজির কাছে লিখিত আবেদন দিয়েছি। প্রতিকার না পেলে আদালতে মামলা করব।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নুরুল আমিন বলেন, নিয়োগ পরীক্ষা যথাযথ নিয়ম মেনে স্বচ্ছতার মাধ্যমে সম্পন্ন হয়েছে। মাও. মোহাম্মদ একরামুল হক সর্বোচ্চ নাম্বার পেয়ে প্রথমস্থান অর্জন করেন। মাদরাসা কর্তৃপক্ষ কি কারণে নিয়োগ বাতিল করেছে সেটা আমি জানিনা। তবে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট পদে কাঙ্খিত প্রার্থী না পাওয়ায় নিয়োগ বাতিল করে পূণরায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছেন। প্রথমস্থান অর্জনকারীর পক্ষ থেকে ডিজির কাছে লিখিত অভিযোগের অনুলিপি পেয়েছি।