দাগনভূঞা প্রতিনিধি->>

দাগনভূঞা উপজেলার জায়লস্কর ইউনিয়নে ছয় বছরে প্রায় ৭০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস অবৈধভাবে ব্যবহার হয়েছে। যার মূল্য দুই কোটি টাকার বেশি। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন তালিকাভুক্ত ৩০ হাজার ৫১২ গ্রাহক।

বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির কুমিল্লা প্রধান কার্যালয়ের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে এতথ্য জানা গেছে।

ওই সূত্রের তথ্যমতে, ২০১৬ সালে জায়লস্কর ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর, ওমরপুর, এনায়েতপুর, ছোট আহম্মদপুর এলাকায় বাড়ি বাড়ি অবৈধ গ্যাস সংযোগ দেওয়া হয়। এসব এলাকার ৩০০ অবৈধ গ্যাস ব্যবহারকারী প্রতি মাসে ০.৯২ ঘনফুট গ্যাস ব্যবহার করেছেন। এর মূল্য প্রায় দুই লাখ ৮৫ হাজার।

সূত্র আরও জানায়, লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ দিয়েছে দালাল চক্র। ৩০০ অবৈধ ব্যবহারকারীর অনেকে ভুয়া বিল বইয়ের মাধ্যমে ব্যাংকে বিলও জমা দিয়েছে।

গ্রাহকদের অভিযোগ, কিছুদিন পরপর ফেনী জেলায় হাজার হাজার ফুট অবৈধ গ্যাস লাইন উচ্ছেদ করা হয়। অবৈধ সংযোগ থাকায় তারা চাহিদামতো গ্যাস পাচ্ছেন না। এতে রান্না করতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন তারা।

পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর কোহিনুর আলম রানা বলেন, ‘বিরিঞ্চি, সহদেবপুর, মৌলভীবাজার এলাকায় গ্যাস থাকে না বললেই চলে। সকাল ৭টার মধ্যে চলে গেলে বিকেল ৩টার আগে কখনো পাওয়া যায় না। এজন্য ভোরে রান্নার কাজ করতে গিয়ে গৃহিণীদের হিমশিম খেতে হয়।’

মিজান রোডের বাসিন্দা ও ক্রীড়া সংগঠক ইমন উল হক জানান, তাদের গ্র্যান্ড হক টাওয়ারে দিনের বেশিরভাগ সময় গ্যাস থাকে না। অথচ ঠিকই প্রতি মাসে গ্যাস বিল পরিশোধ করতে হয়। সংকট কাটাতে সিলিন্ডারও ব্যবহার করতে হয় মাঝেমধ্যে।

আবু তাহের নামের আরেক বাসিন্দা বলেন, ‘শহরের শান্তি কোম্পানি এলাকায় সকাল ১০টা থেকে বিকেল পর্যন্ত গ্যাস থাকে না। এটি অনেকটা অঘোষিত রুটিন হয়ে গেছে। এজন্য সকাল ৯টার আগে ও রাতের মধ্যে রান্নার কাজ সেরে নিতে হয়।’

এ বিষয়ে বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক শঙ্কর মজুমদার বলেন, গ্যাস উৎপাদন দিনদিন কমে যাচ্ছে। বিদেশেও এলএমজির দাম বেড়ে গেছে। চাহিদা মেটাতে সরকারের পক্ষ থেকে সেটি আনার জন্য চেষ্টা করছে।

চাহিদার তুলনায় গ্যাস এমনিতেই কম উল্লেখ করে তিনি বলেন, অবৈধ ব্যবহার ঠেকাতে বাখরাবাদ কর্তৃপক্ষ আন্তরিকভাবে কাজ করছে।

ফেনী জেলা প্রশাসক আবু সেলিম মাহমুদ উল হাসান বলেন, দেশে গ্যাস সংকট রোধে সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করছে। সেক্ষেত্রে অবৈধ গ্যাস ব্যবহার রোধ করতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাখরাবাদকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে।