বিশেষ প্রতিবেদক->>

ফেনী জেলা শিল্পকলা একাডেমীর নাট্য বিভাগের আয়োজনে মঞ্চ নাটক ‘একটি অবাস্তব গল্প’ মঞ্চস্থ হয়েছে। সোমবার রাতে জেলা শিল্পকলা একাডেমীর মঞ্চে নাট্যবিভাগের সদস্যরা নাটকি মঞ্চস্থ করেছে। বিমল বন্দ্যোপাধ্যাযয়ের রচনা ‘একটি অবাস্তব গল্প’ নাটকটি নির্দেশনায় ছিলেন জেলা শিল্পকলা একাডেমীর কালচারাল অফিসার এস এম টি কামরান হাসান।

নাট্যকার বিমল বন্দ্যোপাধ্যায়-এর নাটক একটি অবাস্তব গল্প শ্রেণিবৈষম্যের বিরুদ্ধে উচ্চারিত এক আধুনিক কণ্ঠস্বর। এই নাটকের প্রধান চরিত্র কমন্ডল একজন পাটকলশ্রমিক। তার বাড়িতে অসুস্থ বাবা। এদিকে দুইমাস ধরে কারখানার শ্রমিকদের বেতন বন্ধ। এরপর কমন্ডলেরা আন্দোলনে নামলে কারখানার মালিক কারখানা বন্ধের ঘোষণা দেয়। অভুক্ত শ্বশুর ও বাচ্চাদের কথা ভেবে কমন্ডলের স্ত্রী পাশের বাড়ি থেকে চাল চুরি করে। কমন্ডল এটা কখনোই মেনে নিতে পারেনি। বউকে শাসানোর এক পর্যায়ে গলা টিপে ধরলে মৃত্যু হয় কমন্ডলের বউয়ের। হত্যা মামলা হয় তার বিরুদ্ধে। আর তাতেই ফাঁসি।

নাটকে বিভিন্ন চরিত্রে অংশগ্রহণ করেন মুহাম্মদ আছাদুর রহমান (অহীন ও বর্ণনাকারী), মোঃ আবদুলাহ আল ফরহাদ (জেলার), নাহিদ হাসান (কমন্ডল), তাসফিয়াহ ইসলাম অহনা (ডাক্তার), আখতারুজ্জামান (নকুল), কাজী জামিল হোসেন চয়ন (কমল), সাজ্জাদুল ইসলাম (বাচস্পতি), নুরশেদ আলী (রামসিং), মেহেদী হাসান (কেষ্ট), নাহিনা আক্তার (বিজলী), তন্ময় নাথ টিটু (পাড়াবাসী), তাছলিমা আক্তার (পাড়াবাসী), নাসির উদ্দিন সাইমুম (জল্লাদ-১), মোহাম্মদ জাহিদ হাসান (জল্লাদ-২), জাকের হোসেন (জল্লাদ-৩)।

নাটক শেষে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. মাসুদুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অবস্) নাদিয়া ফারজানা, প্রবীণ নাট্যব্যক্তিত্ব নারায়ণ নাগ, নাসির উদ্দিন সাইমুম, সাংবাদিক বখতেয়ার ইসলাম মুন্না, আবৃত্তি শিল্পী সমরজিৎ দাস টুটুল প্রমুখ।

জেলা শিল্পকলা একাডেমীর কালচারাল অফিসার এস এম টি কামরান হাসান বলেন, ‘আমাদের এই নাটকটি ফেনী জেলার প্রয়াত নাট্যজন ও সংস্কৃতি-জনদের উৎসর্গ করছি। আমার চেয়েছি নাটকের পাত্র-পাত্রীরা দর্শকদের একটি চমৎকার গল্প শোনাক ও দেখাক। আমার বিশ্বাস তারা সেটি করতে সক্ষম এবং এজন্যই আমরা নাটকটি মঞ্চায়ন করেছি। যদিও এই নাটকটি জেলা শিল্পকলা একাডেমি ফেনীর নাটক বিভাগের তৃতীয় প্রযোজনা তবুও পূর্ণাঙ্গ মঞ্চনাটক রূপে এটিই প্রথম। তাই আমার বিশ্বাস এই নাটকের সাথে সম্পৃক্ত সবাই একটি সুন্দর ইতিহাসের অংশ হতে পেরেছে। নাটকটি উপস্থাপনের ক্ষেত্রে কখনো-কখনো ঐতিহ্যবাহী বাংলা নাট্যের বর্ণনাত্মক রূপকে বেছে নেওয়া হয়েছে, অন্য দিকে গল্প উপস্থাপনে চরিত্রাভিনয় রীতিই এখানে মূখ্য। মঞ্চসজ্জার ক্ষেত্রে সাজে স্টিভ-রিয়ালিস্টিক ফর্ম বেছে নেয়া হয়েছে।জয় হোক নাটকের, জয় হোক নাট্যকর্মীদের।’

নাটকে কোরিওগ্রাফিতে ছিলেন নাসরিন জাহান ও মেহেদী হাসান। মিউজিকে ছিলেন মোঃ আবদুলাহ আল ফরহাদ, পলক চক্রবর্তী, তানভীর আলম পাবেল। আলোক পরিকল্পনা ও প্রক্ষেপণে ছিলেন মো. শাহরিয়ার হোসেন মজুমদার আরিফ, সজীব মিয়া ও মুহাম্মদ আজিজুল হক। রূপসজ্জায় ছিলেন শাহীনূর সরোয়ার। পোস্টার ও স্যুভেনিরে ছিলেন মায়ান মাহমুদ। মঞ্চ ব্যবস্থাপক মোঃ মাহমুদুল হাসান চৌধুরী ও প্রযোজনা সমন্বয়কারী ছিলেন নাহিদ হাসান।

অন্যান্যদের মধ্যে নাটকটি উপভোগ করেছেন কবি মঞ্জুর তাজিম, জাহিদ হোসেন বাবলু, বিধান চন্দ্র শীল, পৃথ্বিরাজ চক্রবর্তী, আনোয়ার হোসেন রাজু, নাজমুল হক শামীম, হুমায়ুন মজুমদার, তাহমিনা তোফা সীমা প্রমুখ।