image

নাজমুল হক শামীম,১৮ জানুয়ারি->>

ফেনীর শারমিন নামে ১১ বছরের এক শিশু গৃহকর্মী নির্মম নির্যাতনের স্বীকার হয়েছেন। গৃহকর্মী নির্যাতনের ঘটনায় শনিবার রাতে শহরের গৃহবধু সোহানা আক্তার প্রিয়াকে (২৬) ‍আটক করেছে পুলিশ। প্রিয়া পেট্রোবাংলা এলাকার মাহি হাউজের নজরুল ইসলাম রানার স্ত্রী। নির্যাতিত শিশু শারমিন কুমিল্লার গোবিন্দ পুর এলাকার মো. রিপনের মেয়ে। শিশু শারমিন ফেনী সদর হাসপাতালে মূমুর্ষ অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছে।
শারমিনের মা জেসমিন আক্তার জানায়, দরিদ্র বাবা-মা’র ২য় মেয়ে শারমিনকে অভাবের তাড়নায় কুমিল্লার গোবিন্দ পুর একটি পরিবারে কাজের জন্য দেয়। ওই ঘরের মেয়ে প্রিয়া আক্তারের বিয়ে হলে দুই বছর পূর্বে গৃহকর্মী শারমিনকে নিয়ে প্রিয়া ফেনী শহরের পেট্রল বাংলা এলাকার মাহি হাউজে বসবান করেন। প্রিয়ার স্বামী ঠিকাদার নজরুল ইসলাম সহ প্রিয়া আক্তার মাঝে-মধ্যেই নানা অজুহাতে শারমিনের ওপর নির্যতন চালাত। গৃহকর্মী শারমিনের শরীরে কখনও গরম খুন্তির ছেঁকা বা ফুটন্ত গরম পানি ঢেলে দিতো। শনিবার রাতে শারমিনের শরীরে গরম পানি ঢেলে দিলে প্রতিবেশিরা এ ঘটনাটি পুলিশকে জানায়। পরে পুলিশ ওই বাসা থেকে শারমিনকে উদ্ধার করে পুলিশ হেফাজতে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠায়।
শিশু শারমিন জানায়, সামান্য ভুল-ত্রুটির কিংবা কাজে অমনোযোগী হলেই মালিক ও তার স্ত্রী শিশুটির শরীরে খুন্তির ছেঁকা ও গরম পানি ঢেলে নির্যাতন করতো।
ফেনী মডেল থানায় গৃহকত্রী সোহানা আক্তার প্রিয়াকে শিশু গৃহকর্মীকে নির্যাতনের বিষয় জানতে চাইলে তিনি তা অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, বাসার একটি তালা ভাঙ্গার অপরাধে তার স্বামী তাকে (গৃহকর্মী) সামান্য চড় থাপ্পড় দিয়েছে মাত্র। এলাকার সন্ত্রাসীদের চাদা দেওয়া হয়নি বলে তারা তাকে (গৃহকত্রী) পুলিশে দিয়েছে।
ফেনী সদর হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) মোহাম্মদ গোলাম মাওলা জানান, শিশুর শরীর, মুখ, গলা ও পিঠে ছেকার ও আঘাতের চিহ্ন ও ঝলসানোর আলামত রয়েছে। তার উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। ক্ষতস্থান শুকাতে অনেক সময় লাগবে। উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হতে পারে।
ফেনী মডেল থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহবুব মোর্শেদ জানান, নির্যাতনের খবর পুলিশ গৃহকর্মী শারমিনকে উদ্ধার করে। শনিবার রাতে গৃহপরিচালক প্রিয়া আক্তারকে আটক করেছে পুলিশ। রোববার সকালে গৃহকর্মী শারমিনের মা বাদি হয়ে থানায় মামলা দায়ের করলে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে দুপুরে প্রিয়া আক্তারকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠনো হয়েছে। ঘটনার পর থেকে নজরুল ইসলাম রানা পলাতক রয়েছে।