নিজস্ব প্রতিনিধি->>

ফেনীতে মুজিববর্ষ উপলক্ষে ভূমি ও গৃহহীনদের জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঘর বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) বুঝিয়ে দেওয়া হবে। দেশজুড়ে ৩য় ধাপের ২য় পর্যায়ে আরও ৪৩৩ পরিবার ঘর বুঝে পাওয়ার মধ্যে দিয়ে ফেনীর ৪টি উপজেলা- ফেনী সদর, ছাগলনাইয়া, পরশুরাম এবং ফুলগাজী আপাতত ভূমিহীন মুক্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সোনাগাজীতে ২০০, দাগনভূঞায় ১৬৬, ফুলগাজীতে ২৪, সদরে ২২, পরশুরামে ১৯ ও ছাগলনাইয়ায় ২ পরিবারকে ঘর বুঝিয়ে দেওয়া হবে। তৃতীয় ধাপের পরবর্তী পর্যায়ে আরও ১০০ পরিবারকে ঘর দেওয়া হবে। অবশিষ্ট থাকবে ৭৭৬টি পরিবার।

জেলা প্রশাসক আবু সেলিম মাহমুদ-উল হাসান জানান, মুজিববর্ষ উপলক্ষে ভূমি ও গৃহহীনদের জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর পাওয়ার কথা রয়েছে ২০৪১ পরিবারের। ইতোমধ্যে ঘর বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে ৮৩২ পরিবারকে।

তিনি আরও বলেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পে নির্ধারিত যাচাই বাছাই কমিটির মাধ্যমে ফেনী সদরে ৩৩১, ছাগলনাইয়ায় ১৫০, পরশুরামে ৯৫ এবং ফুলগাজীতে ৯৪ পরিবারকে ভূমিহীন তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। তিন ধাপে উক্ত পরিবারগুলো প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে ভূমিসহ ঘর পেয়েছে।

জেলা প্রশাসক বলেন, ফেনীর ৪টি উপজেলাকে আপাতত ভূমিহীন মুক্ত উপজেলা ঘোষণা করা হচ্ছে। পরবর্তীতে কেউ যদি ভূমিহীন হিসেবে আবেদন করেন, তবে তাকেও উপকারভোগীর তালিকায় নেওয়া হবে।

উপকারভোগীর তালিকায় আরও অন্তর্ভূক্তির সুযোগ থাকা, না থাকা প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক আবু সেলিম মাহমুদ-উল হাসান বলেন, যদি কোনো কারণে কোনো ব্যক্তি ঘর পাওয়ার যোগ্য হন কিন্তু তালিকায় নাম না থাকলেও, যোগাযোগ করলে তিনি অবশ্যই ঘর পাবেন। যেকোনো সময়ই এ সুবিধা ভোগ করার সুযোগ রয়েছে।

যেভাবে করা হয়েছে উপকারভোগীর তালিকা
উপজেলা টাস্কফোর্সের মাধ্যমে মাঠ পর্যায়ে যাচাই-বাছাই করে তৈরি করা হয়েছে উপকারভোগীর তালিকা। ২৩ সদস্যের এ কমিটিতে স্থানীয় সাংসদ এবং উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান উপদেষ্টা হিসেবে রয়েছেন। কমিটির সভাপতি হিসেবে রয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। এছাড়া উপজেলা পর্যায়ে ১৬ সরকারি দপ্তরের প্রধান, ইউপি চেয়ারম্যান, দুইজন সমাজকর্মী এবং সদস্য সচিব হিসেবে সহকারি কমিশনার (ভূমি) রয়েছেন। জেলা টাস্কফোর্সে জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে রয়েছেন ২৫ সদস্য।

তালিকা প্রণয়ন নিয়ে অভিযোগ
তালিকা প্রণয়ন নিয়ে রয়েছে কিছু অভিযোগ। তালিকায় আরও ভূমিহীনের সুযোগ না পাওয়া, তুলনামূলক অবস্থাসম্পন্ন পরিবারের নাম থাকা, উপকারভোগী নির্বাচনে স্থানীয় জনপ্রতিনিধির স্বজনপ্রীতি-অভিযোগগুলোর অন্যতম। তবে সুনির্দিষ্টভাবে কেউ মুখ খুলতে না চাইলেও প্রধানমন্ত্রীর এমন উপহার পেতে জনপ্রতিনিধি পর্যন্ত যেতে না পারার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ইতোপূর্বে সংবাদ প্রকাশের প্রেক্ষিতে ছাগলনাইয়া উপজেলার সদ্য বিদায়ী নির্বাহী কর্মকর্তা সাজিয়া তাহের তিনজন অসহায় নারীকে ঘর দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেন। তাদের মধ্যে দুইজনের নাম রহিমা বেগম ও রহিমা খাতুন। তিন উপকারভোগী কথা প্রসঙ্গে সাজিয়া তাহের জানিয়েছেন, ইউপি চেয়ারম্যান পর্যন্ত যাওয়ার পথ তাদের জানা ছিল না।