image

এম.রহিম উল্যাহ বাবুল,১৮ ডিসেম্বর ->>
সারা দেশের মত ফেনী জেলার প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোতেও ইতিমধ্যে বার্ষিক পরীক্ষা গ্রহণের কাজ শেষ হয়েছে। এ পরীক্ষায় তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণিতে চারু ও কারু নামে একটি বিষয়ের পরীক্ষা নেয়া হয়েছে, যে বিষয়টি সার্বিক বিবেচনায় মোটেই গুরুত্বপূর্ণ নয়। কারণ বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়, প্রাথমিক বিজ্ঞান এবং ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষার মত এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বাধ্যতামূলক কোন বিষয় নয়। শিক্ষার্থীদের মেধা বিকাশের জন্য অতিরিক্ত বিষয় হিসাবে এটি পাঠ্য সূচীতে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। তবে শিক্ষার্থীদের মেধাক্রম নির্ণয় ও ফল প্রকাশের সময় ঐ বিষয়ের নাম্বার যোগ করা হয় না। আর গুরুত্বহীন বলে শ্রেণিতেও বিষয়টি পাঠদান করা হয় না। কিন্তু সারাবছর গুরুত্বহীন হিসাবে থাকলেও ফেনী জেলার সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ বছর বার্ষিক পরীক্ষায় সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে চারু ও কারু বিষয়ের পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়েছে। কোন কোন উপজেলায় ৫০ নম্বরের আবার কোন কোন উপজেলায় ১০০ নম্বরের পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়েছে। যার মধ্যে ৫০ শতাংশ নম্বর লিখিত এবং ৫০ শতাংশ নম্বর ধরা হয়েছে ব্যবহারিকে। ব্যবহারিক পরীক্ষাটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের নিকট সাধারণত হাতের কাজ বা বাড়ীর কাজ নামেই বেশি পরিচিত। ব্যবহারিক পরীক্ষা বলতে শিক্ষার্থীদের হাতে কলমে কিছু আঁকা বা সৃজনশীল কোন কিছু তৈরি করা বুঝালেও এক শ্রেণির প্রাজ্ঞ শিক্ষক ব্যবহারিক হিসাবে শিক্ষার্থীদেরকে বিভিন্ন উপঢৌকন বা উপহার আনতে বাধ্য করেছে। আর না আনলে শারীরিক শাস্তি ও পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়েছে বারংবার। ফলে শিক্ষার্থীরা অভিভাবকদের কোন না কোন জিনিস কিনে দিতে বাধ্য করেছে। চারু ও কারু বিষয়ের ব্যবহারিকের নামে শিক্ষার্থী কর্তৃক প্রদত্ত উপহারের তালিকায় অন্যান্য বছরের মত এ বছরও ছিল ঝাড়–, ফুলের টব, পাখা, বাঁশ ও বেতের তৈরি বিভিন্ন সামগ্রী, পানির ফিল্টার, চক-ডাস্টার, দেয়াল ঘড়ি, কাপ-পিরিচ, জগ-গ্লাস, কলম, জ্যামিতি বক্স, পুতুল, খেলনা গাড়ি, ওয়াল মেট, পর্দার কাপড়, টেবিল ক্লথ ইত্যাদি নানা সামগ্রী। আর চারু ও কারুর ব্যবহারিক হিসাবে প্রাপ্ত সকল উপহার সামগ্রীও শিক্ষকগণ ইতিমধ্যে ভাগ ভাটোয়ারা করে নিজ নিজ ঘরবাড়ীতে নিয়ে গেছেন। এ ব্যাপারে ফেনী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (চলতি দায়িত্ব) মোহাম্মদ আবদুল আজিজের সাথে কথা বলা হলে তিনি বলেন, চারু ও কারু বিষয়টি অবশ্যই কোন আবশ্যিক বিষয় নয়। মেধাক্রম নির্ণয়ে এ বিষয়ের ব্যবহারিক বা লিখিত নম্বরের কোন ভূমিকাও নেই। তারপরও বাড়ীর কাজ বা ব্যবহারিক পরীক্ষার নামে কোন শিক্ষক যদি কোন প্রকার উপহার বা উপঢৌকন আদায় করে থাকে তা অবশ্যই দু:খ জনক ও শাস্তি যোগ্য অপরাধ। তিনি বিষয়টি অবশ্যই যথাযথভাবে খতিয়ে দেখার এবং ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনা আর না ঘটে সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন।