বিশেষ প্রতিনিধি->>
রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বের সুরক্ষার পাশাপাশি দেশের গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক ধারা অব্যাহত রাখতে সেনাবাহিনীকে সদা প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন,গণতন্ত্র রক্ষায় আপনাদের সজাগ থাকতে হবে।দেশের গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক ধারা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি আধুনিক, উন্নত ও সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে সেনাবাহিনীকে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে হবে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে নাটোরে কাদিরাবাদ সেনানিবাসের ইঞ্জিনিয়ার সেন্টার এন্ড স্কুল অব মিলিটারি ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে কোরের বাৎসরিক অধিনায়ক সম্মেলন ও ৬ষ্ঠ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী অভ্যন্তরীণ বা বাহ্যিক যে কোনো হুমকি মোকাবেলায় সেনাবাহিনীকে সর্বদা প্রস্তুত থাকারও আহ্বান জানান।
উপস্থিত সেনা কর্মকর্তাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পবিত্র সংবিধান এবং দেশের সার্বভৌমত্ব সুরক্ষায় আপনাদের ঐক্যবদ্ধ থেকে অভ্যন্তরীণ বা বাহ্যিক যে কোনো হুমকি মোকাবিলায় সর্বদা প্রস্তুত থাকতে হবে।
ইঞ্জিনিয়ারিং কোরকে সেনাবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ ও ঐতিহ্যবাহী অংশ হিসেবে বর্ণনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই কোরে ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড ও ডিভ ইঞ্জিনিয়ার ব্যাটালিয়ন গঠনের প্রক্রিয়া চলছে।
ইঞ্জিনিয়ার সেন্টার অ্যান্ড স্কুল অফ মিলিটারি ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে রিক্রুট প্রশিক্ষণের সক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়ার কথাও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
রামু ও উখিয়ায় সাম্প্রদায়িক হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত বৌদ্ধ বিহার ও মন্দির সংস্কারে সেনাবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ অবদানের কথা প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী একাগ্রতা, কর্মদক্ষতা এবং নানাবিধ জনসেবামূলক কর্মকাণ্ডের জন্য সার্বজনীন আস্থা ও গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করেছে। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশনে সেনা সদস্যদের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে।
যে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও দুর্ঘটনায় দুর্গতদের সাহায্য ও সহযোগিতা করে সশস্ত্র বাহিনী ‘অনন্য দৃষ্টান্ত’ স্থাপন করেছে বলে মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা।
উন্নত, পেশাদার এবং প্রশিক্ষিত সেনাবাহিনী গড়ে তুলতে ১৯৭৪ সালে প্রতিরক্ষা নীতিমালা প্রণয়ন করার কথা মনে করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন,জাতির পিতা প্রণীত নীতিমালার আলোকে আমরা ‘আর্মড ফোর্সেস গোল-২০৩০’ প্রণয়ন করে সেনাবাহিনীর উন্নয়ন ও আধুনিকায়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখেছি।
সেনাবাহিনীর উন্নয়ন ও কল্যাণে বিভিন্ন সময়ে আওয়ামী লীগ সরকারের নেয়া উদ্যোগের কথাও তাঁর ব্ক্তব্যে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ২০০৯ সাল থেকে গত নয় বছরে আমরা সেনাবাহিনীর অবকাঠামোগত পরিবর্তনের পাশাপাশি সক্ষমতা বহুলাংশে বৃদ্ধি করেছি।
সেনাবাহিনীতে নতুন পদাতিক ডিভিশন ও ব্রিগেড প্রতিষ্ঠাসহ অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র ও সরঞ্জাম সজ্জিত করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টায় সেনাসদস্যদের জীবনমান উন্নত হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা সেনাবাহিনীর সকল পদবির সৈনিকদের উন্নত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাসহ বাসস্থান, মেস, এসএম ব্যারাক নির্মাণ করেছি। বেতন ও রেশন বৃদ্ধিসহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধাও বৃদ্ধি করেছি।
এর আগে সকালে কাদিরাবাদ সেনানিবাস পৌঁছান শেখ হাসিনা। পরে শহীদ শামসুল হক প্যারেড গ্রাউন্ডে এসে পৌছলে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আবু বেলাল মোহম্মদ শফিউল হক ও কাদিরাবাদ সেনানিবাসের কমান্ডেন্ট ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফ এম জাহিদ হাসান তাঁকে স্বাগত জানান। সেখানে কুচকাওয়াজে সালাম ও অভিবাদন গ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মন্ত্রী পরিষদের সদস্য, এমপি, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল অবসরপ্রাপ্ত তারিক আহমেদ সিদ্দিক, নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদ, ও বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চীফ মার্শাল আবু এসরার, উধ্বর্তন সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারাসহ ইঞ্জিনিয়ার সেন্টার এন্ড স্কুল অব মিলিটারি ইঞ্জিনিয়ারিং এর অবসরপ্রাপ্ত ও চাকুরিরত কর্মকর্তা এবং অন্যান্য পদবির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

তথ্যসূত্র-ডেইলি বাংলাদেশ ডট কম