বিশেষ প্রতিনিধি->>

ফেনীর আলোচিত উপজেলা চেয়ারম্যান একরামুল হক একরাম হত্যা মামলার স্বাক্ষ্যগ্রহণের ধার্য্যকৃত দিনে (৩১তম কার্যদিন) বুধবার দুপুরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) আবুল কালাম আজাদ স্বাক্ষ্য দিয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত সকল আসামীর উপস্থিতে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আমিনুল হকের আদালতে স্বাক্ষ্য দেন এ কর্মকর্তা। আদালত আগামী ১২ অক্টোবর পরবর্তী স্বাক্ষ্যগ্রহণের সময় নির্ধারণ করেছে।

ফেনী জজ কোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এ্যাডভোকেট হাফেজ আহম্মদ জানান, ফেনীর ফুলগাজী উপজেলা চেয়ারম্যান (সাবেক) ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি (সাবেক) একরামুল হক একরাম হত্যা মামলায় বুধবার স্বাক্ষ্যপ্রদানের নির্ধারিত দিন ধার্য্য ছিলো। এ দিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও দাগনভূইয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল কালাম আজাদ স্বাক্ষ্যপ্রদান করেন। বুধবার আদালতের কার্যদিবস শেষে হওয়ায় পরদিন বৃহস্পতিাবর ফের স্বাক্ষ্যগ্রহণ করা হবে। এদিন আদালতে বেশ কয়েকজন আসামীর পক্ষে আইনজীবীরা জামিন আবেদন করলে আদালত তা না মঞ্জুর করে আসামীদের কারাগারে প্রেরণ করেন।

এ পর্যন্ত আদালত মামলার বাদি একরামের বড় ভাই রেজাউল হক জসিম, ছোট ভাই এহসানুল হক, নিহতের স্ত্রী তাসমিন আক্তার, গাড়ি চালক আবদল্লাহ আল মামুনসহ ৫০ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্যগ্রহণ করেছে। মামলার অভিযোগ পত্রে পুলিশ ৫৯ জনকে স্বাক্ষী করেছিলো। এদের মধ্যে সাধারণ স্বাক্ষী রয়েছে ২৮ জন।

এর আগে দুপুরে কারাকর্তৃপক্ষ একরাম হত্যা মামলায় গ্রেপ্তারকৃত আসামীদের মধ্যে ফেনী কারাগার থেকে ১৭ জন ও কুমিল্লা কারাগার থেকে মামলার এজহারভূক্ত প্রধান আসামী মিনার চৌধুরীসহ দুইজনকে আদালতে হাজির করে। এ মামলার জামিনে থাকা ২৩ আসামীর মধ্যে আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গির আদেল, জিয়াউল আলম মিষ্টারসহ ২১ জন আসামী আদালতে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া এ মামলার অন্যতম আসামী সোহেল ওরফে রুটি সোহেল সম্প্রতি র‌্যাবের সাথে বন্দুক যুদ্ধে নিহত হয়েছে। এ মামলায় এখনও পলাতক রয়েছে ১৬ জন আসামী। পলাতকদের মধ্যে কয়েকজন জামিনে যেয়ে পালিয়ে যায়।

এদিকে চলতি বছরের ১৯ মার্চ একরাম হত্যা মামলার আসামি বিএনপি নেতা মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী ওরফে মিনার চৌধুরীর জামিন বাতিল করেছিল সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে আপিল বেঞ্চ ছয়মাসের মধ্যে মামলার বিচারকাজ শেষ করার জন্য নিম্ম আদালতে নির্দেশ দিয়েছিল।

প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের ২০ মে ফেনীর একাডেমি এলাকার বিলাসী সিনেমা হলের সামনে ফুলগাজী উপজেলা পরিষদ’র চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি একরামুল হককে দুর্বৃত্তরা প্রকাশ্যে গুলি করে, কুপিয়ে ও গাড়ীসহ পুড়িয়ে হত্যা করে। ওই হত্যা মামলায় ৫৬ জনকে আসামী করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে হত্যার দ্বায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দেয় ১৫ জন আসামী।