ডেস্ক রির্পোট->>
৬ মাস ২২ দিনের মাথায় সৌদি থেকে মঙ্গলবার দেশে ফেরেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার রীতা। মানসিকভাবে অনেকটা অসুস্থ। মালীক একটা টিকেট কিনে ৪৩১ রিয়াল ধরিয়ে দিয়ে বিমানে তুলে দিয়েছিলেন। ঢাকায় নেমে সেটা ভাঙ্গিয়ে মাত্র নয় হাজার টাকার মতো পান রীতা। কিন্তু তার কাছে সেটা মাত্র নয় হাজার টাকা নয়। অনেক নির্যাতনের ফল, ৬ মাস ২২ দিনের কামাই।
এয়ারপোর্ট থেকে বের হয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া যাবার বাস খোঁজেন রীতা। বিধ্বস্ত চেহারা ও এলোমেলো কথাবার্তায় এগিয়ে আসেন ‘হৃদয়বান’ মানিক । জানান, তার শ্বশুরবাড়িও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। তিনিও যাবেন। কিন্তু টঙ্গী ছাড়া বাস পাওয়া যাবে না। কিছুটা হেঁটে উত্তরার ভেতরের রাস্তায় রিক্সায় চড়েন তারা।
সাথের টাকা পয়সা রীতাকে কাগজে মুড়িয়ে নিতে বলেন মানিক, পথে চোর বাটপারের ভয়! মানসিকভাবে অনেকটা অসুস্থ রীতা টাকাগুলো বের করে মানিকের হাতে দেন। পকেট থেকে একটা কাগজ বের করে মানিক যত্ন করে টাকাগুলো কাগজে মুড়িয়ে ফেরত দেন।
টঙ্গীতে রীতাকে বাসে বসিয়ে দিয়ে মানিক টিকেট কাটতে নীচে যান। মানিকের আসতে দেরী দেখে রীতার সন্দেহ হয়। কাগজের মোড়া খুলে দেখেন ভেতরে টাকা নেই। কাগজের টুকরা। টাকার মোড়া পরিবর্তন করে প্রতারক মানিক কাগজের মোড়া ধরিয়ে দিয়েছেন।
৬ মাস ২২ দিনের কামাই। একদিনে খুইয়ে দেবে? ঘুরে দাঁড়ায় রীতা। বাস থেকে নেমে পাগলের মত খুঁজতে থাকেন। নাই। দৌঁড়াতে দৌঁড়াতে ছুটে আসেন এয়ারপোর্ট চত্বরে। কান্নাকাটি। পুলিশ জনতাসহ মানিককে খোঁজেন। নাই। এদিকে রাতও হয়ে গেছে। আশা ছেড়ে দিয়ে কাঁদতে কাঁদতে ট্রেনে বাড়ি যাবার জন্য বিমানবন্দর রেলস্টেশনের দিকে এগুতে থাকেন।
রাস্তা পার হতে ওভারব্রীজে উঠে দেখেন, মানিক মিয়া মোবাইলে কথা বলছেন। ঝাপিয়ে পড়েন। উপস্থিত পাবলিকসহ মানিককে ধরে এয়ারপোর্ট এপিবিএনের হাতে তুলে দেন।
রীতা তার টাকা নিজেই উদ্ধার করেছেন, সেটা বড় কথা নয়। মানিককে একবছরের জন্য শ্বশুরবাড়িতে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছেন, সেটাও নতুন কিছু নয়। ভাবছি, ৬ মাস ২২ দিনের কামাই কিভাবে ৪৩১ রিয়াল হয়! ভাবছি, আমাদের নারী কর্মীরা কেন ওখানে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়!
ভাবছি…
ভাবতেই থাকি…
ভাবতেই থাকবো…
সূত্র-magistrates all airports of bangladesh