বিশেষ প্রতিনিধি->>
আমরা ভাষায় এক, ভালবাসায় এক মানবতায় এক এই স্লোগানকে সামনে রেখে বারাসাত কথামালা কবিতাগোষ্ঠী আয়োজিত বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানটি সম্পন্ন হয়েছে। রবিবার অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের সরকারের দুই মন্ত্রী শ্রী পুর্নেন্দু বসু, কৃষি বিভাগ মন্ত্রী, গিয়াস উদ্দিন মোল্লা সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও মাদ্রাসা শিক্ষা মন্ত্রী
সঙ্গীত পরিবেশন করেন বাংলাদেশের এ প্রজন্মের হার্টথ্রব সঙ্গীত শিল্পী তানজিলা রুমা,আনিশা বিনতে আবদুল্লাহ, নার্গিস চৌধুরী কলকাতার লিপিকা গুহ ঠাকুরতা রূপা দাশ গুপ্ত, জয়শ্রী রায় ও সানিয়া রিমা, দলীয় সঙ্গীত পরিবেশনা কবিতা আবৃত্তিসহ নানাবিদ পরিবেশনা দু’ বাংলার মর্যাদাকর এ মৈত্রী উৎসবে গুণীজনদের সম্মাননা পদক প্রদান করা হয়। বাংলাদেশ থেকে যারা সম্মাননা পদক লাভ করেন তাদের মধ্যে সাংবাদিকতায় নোয়াখালী প্রতিদিন, মোঃ রফিকুল আনোয়ার, চিকিৎসা ক্ষেত্রে সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডাঃ রোবায়েত ইসলাম মন্টি, শিক্ষা ক্ষেত্রে আমেরিকা প্রবাসী মোহাম্মদ কাজল এবং সঙ্গীত ক্ষেত্রে আনিসা বিন আব্দুল্লাহ ও তানজিনা রুমা, জনশক্তি রফতানিতে মোঃ আনোয়ার হোসেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই দু’দেশের জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে। এ সময় শান্তির দূত হিসিবে পরিচিত সাদা পায়রা উড়িয়ে দেন গিয়াস উদ্দিন মোল্লা, নোয়াখালী প্রতিদিন সম্পাদক রফিকুল আনোয়ার, অবাক পৃথিবীর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক জহিরুল ইসলাম খোকনসহ পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
কবিগরু রীবন্দ্রনাথ ঠাকুরের অন্তর যম বিকশিতবার কবিতা তুলে ধরে অনুষ্ঠানের সূচনা। দু’দেশের যে সংস্কৃতি, গান, একত্রিতভাবে পরিবেশিত হয়। সম্মাননা জ্ঞাপন করা হয় আগত অতিথিদের। কৃষিমন্ত্রী পুর্ণেন্দু বসু বলেনÑ বাংলাদেশ ভাষাদিবস আন্দোলনের মাধ্যমে সারাবিশ্বে নিজেদের জায়গা করে নিয়েছে এবং মাতৃভাষা দিবসে হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে দিনটি। বাংলাদেশের শব্দ অভিধান থেকে আমরা পিকোর লেখায় তা ব্যবহার করি। আমাদের দুই বাংলার জাতীয় সঙ্গীত রচনা করেছেন তাতে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তা দুই বাংলার হৃদয়ের মেলবন্ধন ঘটায়। মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক বড়। তার মাঝে কোনও ভেদাভেদ নেই। এ ধরনের অনুষ্ঠান করায় দুই বাংলার মানুষ আবারও এক জায়গায় মিলিত হল তা এক পরম পাওয়া। মন্ত্রী গিয়াস উদ্দিন মোল্লা অনুষ্ঠান পূর্ব এক ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় নোয়াখালী প্রতিদিন সম্পাদককে বলেন, এ পত্রিকা যদি কলকাতা প্রতিদিন হতো, তাহলে অনেক মজা হতো।
অনুষ্ঠানে গিয়াস উদ্দিন মোল্লা বলেনÑ কোনও এক কারণে দেশভাগ হয়েছিল কিন্তু বাঙালির হৃদয়, দুই বাংলাকে হৃদয় থেকে বিচ্ছেদ ঘটাতে পারেনি। বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও ভাষা সৈনিক পবিত্র সরকার বলেন, আমার জন্মস্থান বাংলাদেশ, দেশ বিভাগের পর আমরা চলে আসলেও আমার এক বোন বাংলাদেশে আছে। আমরা শিল্প সংস্কৃতির কথা বলি এবং নোয়াখালীর কথাও বলি। নোয়াখালী নেতৃত্ব দিচ্ছে পুরো বাংলাদেশের এমনকি আয়াত্ত করছে কলকাতাও রফিকুল আনোয়ারের বদৌলতে।
তিনিও বলেন, নানা কাজে বাংলাদেশ যান এবং থাকেন এদেশে। তাই তার কাছে মনে হয় দু’ বাংলাই এক। বাংলাদেশে আমরা এক সঙ্গেই আছি। উপস্থিত এপার বাংলা থেকে আগত অতিথিরা বক্তব্য রাখতে গিয়ে আবেগপ্রবণ হয়ে পুরেনো সেব দিনের কথা তুলে ধরেন। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার সময় ভারত যেভাবে তাদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল তার কথাও মনে করেন তাদের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে। তারা বলেন সংস্কৃতিকে কোনও বন্ধনে আটকানো যায় না। তা বিকশিত হবেই। যার প্রমাণ কথামালা মৈত্রী উৎসব। এ উৎসবে প্রমাণ হলো বাংলা তো বাংলা, সেটা পৃথিবীর যেখানেই হোক এই বাংলা ঐ বাংলাকে যিনি একত্রিত করেছেন তিনি হলেনÑ অবাক পৃথিবীর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক জহিরুল ইসলাম, তিনি অনেক চেষ্টা প্রচেষ্টায় যেসব করেছেন সবমিলিয়ে ঝমকালো বর্ণাঢ্য কলকাতার শতশত ভিআইপির এ অনুষ্ঠানটি কলকাতার প্রায় সবকটি দৈনিকে সংবাদ প্রচার করেছেন। এরপর বাংলাদেশের বিশিষ্ট রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী তার গানের মাধুরতায় ভরিয়ে দেন এবং কবিতা থেকে আবৃত্তি মুখরিত হয়ে শোনেন আগত দর্শকবৃন্দ। অপরদিকে এদিন রবীন্দ্র ভবন থেকে অনুষ্ঠান শেষ মন্ত্রী গিয়াস উদ্দিন মোল্লার লালবাতি ব্যবহার করার প্রশ্ন করেন যদিও এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রাজ্যের তরফে চিফ চিঠি দিয়েছে, এখনও যে সম্পকৃত কিছু জান্ জানায় তিনি তা ব্যবহার করছেন। পূর্ণেন্দু বসুকে তিস্তাচুক্তি নিয়ে প্রশ্ন করা হলেও এ প্রসঙ্গে তিনি কোনও মন্তব্য করেননি। পুরো অনুষ্ঠানটি উপভোগ করেছিল অর্ডিয়েন্স উপস্থিত হাজার জনতাসহ কলকাতার বাংলা চ্যানেল ওয়ান এর কোটি কোটি দর্শক। বাংলা মাতানো এ অনুষ্ঠানটি পৃথিবীর দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে সমস্ত বাংলা ভাষাভাষীদের কাছে। ​