বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টার দিকে দাগনভূইয়া থেকে মোটরসাইকেলযোগে ফেনী যাচ্ছিলাম।তেমুহনী পার হয়ে একটু সামনে গেলে দেখতে পাই সড়কের ডান পাশে এক অজ্ঞাত(৬০) বয়স্ক মহিলা কাতরাচ্ছে।আর অনেক উৎসুক মানুষ তার তামাশা দেখছে।উপস্থিত লোকদের জিজ্ঞাসা করলাম কি হলো ?একজন বললো ১০-১৫ মিনিট আগে একটা গাড়ি ধাক্কা দিলো তারে।জানতে চাইলাম কিসে মারলো ?অন্যএকজন বললো মহিপাল থেকে দ্রুতগামী একটি ইমা পরিবহন মহিলাটিকে রাস্তা পারাপারের সময় তাকে জোরে ধাক্কা দেয়।এসময় সবাইকে বললাম ভাই মহিলাটি মারা যাবে তাকে একটু হাসপাতালে নিয়ে যাই ।কিন্তু কেউ এগিয়ে আসছে না।এসময় আমি সিএনজি দাঁড় করানোর চেষ্টা করছি,কিন্তু কেউ রোগী নিতে রাজী নয়।পরে নিজের মোটরসাইকেল দিয়ে রাস্তা ব্যরিকেড দিয়ে একটি সিএনজি দাঁড় করালাম । ওনাকে নিয়ে রওয়ানা হলাম ।এরপর ফেনী সদর হাসপাতালে পৌঁছালাম ৬.১০মিনিটে।কর্তব্যরত ডাক্তার শাহাব উদ্দিন রিটু চিকিৎসা দেওয়া শুরু করেন।তার মাথায় মারাত্মক আঘাত,দুই হাতের হাড় আলাদা হয়ে মাংসের সাথে ঝুলছে।পায়ের বিভিন্ন স্থানে আঘাত রয়েছে।ডাক্তারের কাছে জানতে চাইলাম কি অবস্থা রোগীর তিনি বলেন আশংকাজনক।উপরের বেডে তোলার আধাঘন্টা পরে মৃত্যুবরন করে।পরে সেই মহিলার সঙ্গে থাকা একটি পোটলা ছিল ।সেটি খুলে দেখা যায় এর মধ্যে অনেকগুলো খুচরা পয়সা,২ টাকার,৫টাকার,১০ টাকার নোট ।যোগ করে দেখলাম তাতে ১৫৪০ টাকা আছে।সাথে পেলাম আরো দুটি ছোট চাউলের পোটলা।উপস্থিত ডাক্তার-নার্স সবাই মিলে নিশ্চিত তিনি ভিক্ষাবৃত্তি করে চলতেন।এ টাকা গুলো অনেকদিন ধরে জমিয়েছে।ঘটনার পর একটি বিষয় নিশ্চিত হলাম নিহত মহিলা ভিক্ষুক হওয়ায় তাকে সঙ্গে সঙ্গে কেউ হাসপাতালে নিয়ে আসেনি।সঙ্গে সঙ্গে নিয়ে আসলে হয়তো তাকে বাঁচানো যেতো।আজ মনে হলো মানবতা বলে পৃথিবীতে এখন আর কিছু নেই।

এমাম হোসেন এমাম
সম্পাদক প্রথম ফেনী