বিশেষ প্রতিনিধি->>

ফেনীর ঐতিহ্য বহন করছে শহরের দাউদপুর ব্রীজ এলাকার ‘চারশত’ বছরের পুরনো শীল কড়ই (রেইন ট্রি) গাছটি। কয়েক’শ কালের স্বাক্ষী বৃক্ষটির শাখা প্রশাখা বিস্তৃত রয়েছে অনেকটুকু অংশজুড়ে। প্রতিদিন জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লোকজন বৃক্ষটিকে দেখতে ঢু মারেন ওই এলাকায়।
জেলা পরিষদ সূত্রে জানায়, ১৮’শ শতকের মাঝামাঝির ফেনী মহাকুমার প্রথম প্রশাসক কবি নবীন চন্দ্র সেন এই কইড় গাছের নীচে বসে কবিতা লিখেতেন বলে বিভিন্ন ইতিহাস থেকে ধারনা পাওয়া যায়। তখনও গাছটির বয়স শতবর্ষ অতিক্রম করেছিলো। সে অনুযায়ী গাছটির বর্তমান বয়স প্রায় ‘চারশ’ বছরের কাছাকাছি হতে পারে বলে গাছটির রক্ষনাবেক্ষনকারী প্রতিষ্ঠান জেলা পরিষদ দাবি করেছে। বন বিভাগ ২০১৩ সালের শুরুতে শহরের পাগলামিয়া সড়ক থেকে দাউদপুর সড়ক পর্যন্ত সড়কের উভয় পার্শ্বের মেহগনি, শীল কড়ইসহ বিভিন্ন প্রজাতির জীবিত ৭৪টি কাঠ গাছ বিক্রীর দরপত্র আহবান করেছিল। চারশত বছরের ঐতিহ্যবহনকারী শীল কড়ই গাছটি মৃত দেখিয়ে বিক্রয়ের খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। পরে আন্দলনের মুখে দরপত্র থেকে ওই গাছটিকে বাদ দেওয়া হয়।
জেলা পরিষদের নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান বর্ষিয়ান রাজনীতিবিদ আজিজ আহম্মদ চৌধুরী জানান, ফেনী অঞ্চলে এত বিশাল ও দীর্ঘ ডালসমৃদ্ধ গাছ আর নেই। জেলার ঐতিহাসিক নিদর্শনের মধ্যে এই গাছটি যে অন্যতম তার কোন সন্দেহ নেই। এজন্য এই কড়ই গাছটি কখনও কাটা হয়নি।
ফেনীর প্রবীণ সাংবাদিক ও কবি মাহবুবুল আলম জানান, ফেনী জেলা পরিষদ বা পৌরসভার উদ্যোগে ঐতিহাসিক এই গাছটিকে সংরক্ষণ করে সেখানে একটি মিনি বিনোদন স্পট গড়ে তুলতে পারে। গাছটির চারপাশে গোল বেদী দিয়ে বসার স্থান করার পাশাপাশি গাছটির চারপাশে এসএস স্টিলের রিং পরিয়ে সৌন্দর্য্যবর্ধন করা যেতে পারে।
এদিকে গত বছরের ২৯ ফেব্রুয়ারি দাউদপুর পুল এলাকার চারশ বছরের প্রাচীন কড়ই বৃক্ষ রক্ষার দাবিতে মানববন্ধন করেছিলো বিভিন্ন সংগঠন। মাহবুব-উল হক পেয়ারা ফাউন্ডেশন নামে একটি প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে মানববন্ধন শেষে ওই বৃক্ষের বুকে সাটানো সাইনবোড ও ফেস্টুন অপসারণ করা হয়।